চেয়ারম্যানের সম্মতিতে সরকারী রাস্তায় ভবন নির্মাণ

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২২; সময়: ২:২৯ অপরাহ্ণ |
চেয়ারম্যানের সম্মতিতে সরকারী রাস্তায় ভবন নির্মাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নিয়ামতপুর : নওগাঁর নিয়ামতপুরে সরকারি রাস্তা দখল করে ভবন (পাকা বাড়ী) নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে।

জানা যায়, নিয়ামতপুর উপজেলার পাড়ইল ইউনিয়নের ফুলহারা (বড় সমাসপুর) উপজেলার মৃত হযরত আলীর ছেলে খাইরুল ইসলাম (৪৫) নিজ দখলে থাকা সরকারী রাস্তার উপর ভবন (পাকা বাড়ী) আরসিসি পিলার দিয়ে নির্মানের কাজ শুরু করেছেন। ইতি মধ্যে বেশ কয়েকটি পিলার তৈরী করা হয়ে গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে অভিযোগ পড়লে তাৎক্ষনিক ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার মাধ্যমে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাড়ীর কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়।

খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘এ রকম অনেক খাসজমিই তো গ্রামের অনেকের দখলে রয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মৌখিকভাবে আমাকে বাড়ী নির্মানের অনুমতি দিয়েছে। তা ছাড়া রাস্তার জন্য তো কিছু জমি ফেলে রাখা হয়েছে। তাতে চলাচলের অসুবিধা হওয়ার কথা না। আসলে গ্রামের কিছু মানুষ আমার এখানে ঘর করাটা সহ্য করতে পারছে না।’
এলাকারবাসীর আপত্তির পরও সে ভবনের (পাকা বাড়ী) নির্মানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বাড়ীর পুরোটাই সরকারী রাস্তার জায়গা। বাড়ীর মালিক খাইরুল ইসলাম নিজে স্বীকার করেছেন। যার ফরে স্থানীয়দের চলাচলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি রাস্তা থেকে ভবন সরানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

গ্রামের সচেতন বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তাটি কাঁচা মাটির হলেও, এলাকাবাসীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই রাস্তা দিয়ে আমরা রাজবাড়ী হাট, উপজেলা সদরের যাই, ভ্যান গাড়িতে প্রয়োজনীয় মালপত্র বাড়িতে নেই। কিন্তু যেভাবে ভবন নির্মান করা হয়েছে, তাতে রাস্তাাটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। রাস্তাটি পাকা করার সময় বিঘ্ন ঘটবে। সরকারী কর্মকর্তা পরিদর্শন করে বাড়ীর কাজ বন্ধ রাখতে বললেও তারা কাজ বন্ধ না করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে বাড়ী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

অত্র ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মুজিব গেন্দা বলেন, আমি নিজে ঘটনাস্থল তদন্ত করেছি। রাস্তার জায়গা ৩৫ ফিট। রাস্তা আছে ২০ ফিট। আমি আরো ১৫ ফিট বাদ দিয়ে বাড়ী করতে বলেছি। হয়তো দু-এক হাত সরকারী জায়গা পড়তে পারে। আমি ইউপি চেয়ারম্যান সরকারী সম্পত্তি রক্ষা করার দায়িত্ব আমার।

পাড়ইল ইউপির অত্র ওয়ার্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি অনুমতি দেওয়ার কে? জায়গা কি আমার? সরকারের জায়গার উপর অনেকে বাড়ী করে আছে। খাইরুল ও অনেকদিন যাবত মাটির বাড়ী করে ছিল। এখন সে পাকা বাড়ী বানাচ্ছে। আমি সেখানে দেখতেও যাইনি।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনজুরুল আলম বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। সেখানে সে দেখে বাড়ীর কাজ বন্ধ করে দেয় এবং তিনদিনের একটি নোটীশ দিতে বলা হয় যাতে তিন দিনের মধ্যে যে কাজটুকু করেছে তা অপসারন করা হয়। তারপরেও যদি তারা তিন দিনের মধ্যে অপসারন না করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারী সম্পত্তি তাও আবার রাস্তার জায়গা দখল করে বাড়ী নির্মান করবে তা হয় না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে