২৫ বছরেও শুকায়নি ক্ষত

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২২; সময়: ৩:০৮ অপরাহ্ণ |
২৫ বছরেও শুকায়নি ক্ষত

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৫ বছর আজ। বছর ঘুরে ১৪ জুন এলেই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জবাসীকে মনে করিয়ে দেয় সেই ভয়াল স্মৃতির কথা। সেদিন মধ্যরাতে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা কমলগঞ্জ।

আগুনের লেলিহান শিখায় লাল হয়ে ওঠে জেলার সুনীল আকাশ। প্রাণভয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন লোকজন। তবে ২৫ বছরেও ভয়াবহ সেই দিনটির কথা ভুলতে পারেননি এখানকার বাসিন্দারা।

১৯৯৭ সালের ১৪ জুন রাত পৌনে ২টায় মাগুরছড়া গ্যাসকূপে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা কমলগঞ্জ। সেদিন প্রায় ৫০০ ফুট উচ্চতায় ওঠা আগুনের লেলিহান শিখা লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল বিস্তীর্ণ বনভূমি এলাকা।

আগুনের শিখায় গ্যাসফিল্ড সংলগ্ন লাউয়াছড়া রিজার্ভ ফরেস্ট, মাগুরছড়া খাসিয়াপুঞ্জি, জীববৈচিত্র্য, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, ফুলবাড়ি চা বাগান, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথ এবং কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

দেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ সেই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয় র বন ও বিপুলসংখ্যক জীববৈচিত্র্য। ক্ষতির মুখোমুখি হয় রেল ও সড়কপথ, বিদ্যুৎ লাইনসহ এ অঞ্চলের অসংখ্য স্থাপনা।

দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মার্কিন গ্যাস উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান অক্সিডেন্টাল ক্ষয়ক্ষতির আংশিক পরিশোধ করলেও কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি বন বিভাগ। পূর্ণ ক্ষতিপূরণ না দিয়েই ইউনিকলের কাছে হস্তান্তরের পর সর্বশেষ শেভরনের কাছে বিক্রি হয়েছে এ গ্যাসক্ষেত্র।

শেভরন ২০০৮ সালে ওই বনে ত্রি-মাত্রিক ভূতাত্ত্বিক জরিপ কাজ সম্পন্ন করে। এতেও স্থানীয়ভাবে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

২০১২ সালে শেভরন মৌলভীবাজার ১৪ নম্বর ব্লকের অধীনে নূরজাহান, ফুলবাড়ি এবং জাগছড়া চা বাগানের সবুজ বেষ্টনী কেটে কূপ খননের পর এসব কূপ থেকে চা বাগানের ভেতর দিয়ে ড্রেন খনন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে উত্তোলিত গ্যাস কালাছড়ার মাধ্যমে রশীদপুর গ্রিডে স্থানান্তর চলছে।

পরিবেশ সংরক্ষণবাদীদের তথ্যমতে, বিস্ফোরণে ৬৩ প্রজাতির পশু-পাখির বিনাশ হয়। সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে ১৬৩ দিন। মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ১৫ হাজার কোটি টাকা।

মার্কিন অক্সিডেন্টাল ক্ষয়ক্ষতির আংশিক পরিশোধ করলেও বন বিভাগ কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি। ফিরে আসেনি এখনো প্রাকৃতিক বনের স্বাভাবিক পরিবেশ।

মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির মন্ত্রী জিডিসন প্রধান সুচিয়াং বলেন, এ ঘটনায় প্রাকৃতিক বনের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা কেউ বুঝতে পারবে না। আমরা যারা এ বনে বসবাস করছি তারা বুঝতে পারছি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে