জিজ্ঞাসাবাদে আবারও ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পিকে হালদার

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২; সময়: ২:৪৭ অপরাহ্ণ |
জিজ্ঞাসাবাদে আবারও ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পিকে হালদার

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আটক পি. কে হালদারসহ ছয়জনকে আবারও ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালত।

মঙ্গলবার (৭ জুন) বেলা ১২টার দিকে পিকেসহ আটক ছয়জনকে কলকাতার নগদ দায়রা আদালতের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়। সূত্রে খবর, আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের আবারও জেল হেফাজতের আবেদন জানানো হয়।

এ সময় পিকে’র ভাই প্রাণেশ হালদারের আইনজীবী শুধু তার জন্য জামিন আবেদন করেন। পরে বিচার সেই আবেদন নাকচ করে সবাইকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত এবং আগামী ২১ জনু আবারও কোর্টে হাজির করার আদেশ দেন।

ইডি’র আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, পিকে হালদার এদিন আদালতে স্বীকার করেন তিনি প্রশান্ত হালদার এবং তিনিই শিব শঙ্কর হালদার।

অরিজিৎ আদালতকে জানান, পি. কে হালদার দুবাই, সিঙ্গাপুর গ্রানাডাসহ একাধিক দেশে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। ভারতবর্ষে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকাসহ বাংলাদেশ থেকে মোট ৬০ কোটি টাকা পিকে হালদার তার আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে পাচার করেছেন। পিকে হালদার এবং যাদের মাধ্যমে টাকা পাচার করা হতো তারা সকলেই বাংলাদেশি। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত ৮৮ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গেছে।

মালয়েশিয়ায় পিকে ফ্ল্যাট প্রসঙ্গে অরিজিৎ বলেন, সেখানে তার নামে সাতটি ফ্ল্যাট পাওয়া গেছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সেখানে তদন্ত করার আবেদন করা হয়েছে। দুবাই, সিঙ্গাপুর গ্রানাডায় তার নামে সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে, যেগুলোর অধিকাংশ পিকে হালদারের নামে। তবে ভারতের সম্পত্তিগুলো শিব শঙ্কর হালদার নামে আছে। সব সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ২০০ কোটি টাকা।

ইডি’র আইনজীবী আরও জানান, জেল হেফাজতে থাকা অবস্থায় পি. কে হালদারসহ অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে ইডি।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে প্রতিদিনের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। আর সে কারণেই আবারও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

গত ১৪ মে অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে পিকে হালদার, তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারকে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এরপর দুই দফায় মোট ১৩ দিন ইডি রিমান্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। এ সময় নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় ইডি।

১৩ দিনের ইডি রিমান্ড শেষে গত ২৭ মে আদালত তাদের ১১ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এই পর্বে কারাগার গিয়েও পিকে’কে জিজ্ঞাসাবাদ করে বহু তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের ওই বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে ইডি কর্তৃপক্ষ কিছুই বলতে রাজি হয়নি।

শেষে অরিজিৎ জানান, পিকে-কে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডির কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে, শুধু অশোকনগর বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, পিকে হালদার এবং তার সহযোগীরা গোটা ভারত জুড়ে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল। অর্থ আত্মসাতের একটা বিশাল অংশ বিনিয়োগ করা হয়েছে আবাসন খাতে। কলকাতা এবং তার উপকণ্ঠে এমন একাধিক সংস্থার খোঁজ পাওয়া গেছে, যেগুলো পিকে হালদার বা তার সহযোগীদের হাতেই গড়ে উঠেছে। যদিও সেই আয়ের উৎস পি.কে হালদার বা তার সহযোগীর কেউই দেখাতে পারিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে