কুষ্টিয়ায় বাইকচাপা দিয়ে হত্যার দায়ে দুজনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে হত্যার দায়ে দুইজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

রোববার (৫ জুন) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার নারায়নপুর দহকোলা গ্রামের মৃত আকসের মোল্লার ছেলে ইন্তাদুল হক এবং একই গ্রামের জালু মোল্লার ছেলে রুহুল আমিন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পরপরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পুলিশ পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে দৌলতপুর উপজেলার নারায়নপুর দহকোলা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে ফিরোজের বাড়িতে যায় আসামি ইন্তাদুল হক ও রুহুল আমিন। আসামিরা ফিরোজকে বেড়ানোর কথা বলে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের সাগরখালী কলেজ এলাকায় মোটরসাইকেল বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে ফিরোজকে ধাক্কা দেয়।

এতে ফিরোজ গুরুতর আহত হয় এবং তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম হয়। মোটরসাইকেল রেখে তারা পালিয়ে যাই। স্থানীয়রা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ফিরোজকে প্রথমে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হসপিটালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্থানীয়দের ভুল বুঝিয়ে কৌশলে আসামির স্বজনরা মোটরসাইকেল নিয়ে আসে। একইদিন রাত ১১টার দিকে ফিরোজের মরদেহ একটি মাইক্রোবাসে করে এনে তার বাড়ির সামনে রেখে পালিয়ে যাই আসামিরা।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার নারায়নপুর দহকোলা গ্রামের মৃত কাশেদ আলী ছেলে আব্দুর রহিম বাদী হয়ে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১৩ এপ্রিল আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ৫ জুন রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত ধার্য তারিখে আদালতের বিচারক মামলার আসামিদের শাস্তির আদেশ দেন। আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করা হয়। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী এ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।