ছাত্র-ছাত্রীকে আটকে রাতভর নির্যাতন, আপত্তিকর ভিডিও ধারণ

প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২২; সময়: ৬:১৬ অপরাহ্ণ |
ছাত্র-ছাত্রীকে আটকে রাতভর নির্যাতন, আপত্তিকর ভিডিও ধারণ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ঢাকার ধামরাইয়ে কলেজের এক ছাত্র ও এক ছাত্রীকে রাতভর আটকে অমানুষিক নির্যাতন, আপত্তিকর ভিডিও ধারণ ও ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে। ওই দুই ছাত্রছাত্রী মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দোতরা সরকারি কৃষি কলেজের শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় ৪ চাঁদাবাজকে আটক করেছেন সংঘবদ্ধ জনতা। সেই সঙ্গে ওই ছাত্রছাত্রীকেও উদ্ধার করেছেন তারা। রাতভর তল্লাশি চালিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে চাঁদাবাজদের আস্তানার সন্ধান পান এলাকাবাসী। ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বাবরবাড়ীয়া সুমন উড বিজনেজ সেন্টারের ভেতর থেকে ওই ৪ চাঁদাবাজকে আটক ও ভিকমিটদের উদ্ধারে সক্ষম হন জনতা।

আটক ওই ৪ চাঁদাবাজ হলো- চারিপাড়া গ্রামের সাত্তার মোল্লার ছেলে বক্কবর মোল্লা (৩৫), আব্দুল হকের ছেলে আলামিন হোসেন (২৬), আজিজুল হকের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৪৫) ও কৃষ্ণপুরা গ্রামে মোহাম্মদ মোহন মিয়ার ছেলে পিন্টু মিয়া (৩৮)। তাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দোতরা সরকারি কৃষি কলেজের ক্যাম্পাসে সিট না পাওয়ায় প্রথম সেমিস্টারের এক ছাত্রী ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়ীয়া মো. মোক্তার আলীর ছেলে মোকলেসুর রহমানের বাড়িতে রুম ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। মাঝে মধ্যেই বন্ধুত্বের সুবাদে তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন একই কলেজের মো. রানা আহাম্মেদ নামে তৃতীয় সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থী।

সোমবার রাত ১০টার দিকে ওই দুই শিক্ষার্থীকে একই কক্ষের ভেতর আটক করে সংঘবদ্ধ ওই চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা। এরপর তাদের জিম্মি করে সুমন উড বিজনেজ সেন্টারের ভেতরে নিয়ে বেঁধে রেখে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এরপর তাদের আপত্তিকর ভিডিও চিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দাবি করে ২ লাখ টাকা।

খবর পেয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ চাঁদাবাজ চক্রের একটি মোবাইল ফোনে তাদের মুক্তির ব্যাপারে ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানায়। এতেও তারা ওই দুই ছাত্রছাত্রীকে ছেড়ে দিতে রাজি না হলে বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের জানানো হয়। তারা রাতভর বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে চাঁদাবাজদের আস্তানা শনাক্ত করে ওই ৪ চাঁদাবাজকে আটক ও ছাত্রছাত্রীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

বাড়ির মালিক মো. মোকলেসুর রহমান বলেন, মেয়েটি কৃষি কলেজে আবাসিক রুম না পেয়ে আমার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বন্ধুত্বের সুবাদে ছেলেটি তার সঙ্গে দেখা করতে আসে। তারা কোনো দোষ করেনি। এরপরও তাদের ওই চাঁদাবাজ চক্র আটক করে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। সারারাত অন্য জায়গায় নিয়ে আটকে রাখে। এরা কয়েক দিন আগেও একই এলাকার মো. সিরো বেপারি ও মোয়াজ্জেম হোসেনের দুই ভাড়াটিয়াকে একই কায়দায় আটক করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এলাকার মানুষ প্রাণের ভয়ে এদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায় না।

কলেজছাত্র রানা আহাম্মেদের ভাই মো. হারুন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে এসে ভাইকে উদ্ধার করেছি। এ ব্যাপারে স্যাররা যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই আমার সিদ্ধান্ত। ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো মতামত বা সিদ্ধান্ত নেই।

দোতরা সরকারি কৃষি কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর মোহাম্মদ আবদহ বলেন, বিষয়টি বাইদি বাই শুনেছি। অফিসিয়ালি এখনো আমাকে জানানো হয়নি। আমি একজন সিনিয়র অফিসারকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।

গাঙ্গুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন, বিষয়টি এলাকাবাসী আমাকে জানিয়েছেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে