মাঙ্কিপক্স মোকাবেলায় প্রস্তুত হচ্ছে সংক্রামক হাসপাতালগুলো

প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২২; সময়: ১:৪৬ পূর্বাহ্ণ |
মাঙ্কিপক্স মোকাবেলায় প্রস্তুত হচ্ছে সংক্রামক হাসপাতালগুলো

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের অন্তত এক ডজন দেশে ভাইরাসজনিত বিরল রোগ মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশও সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালগুলো। দেশের কোথাও উপসর্গ পাওয়া গেলে আইইডিসিআরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দেশের সবগুলো বিমান, নৌ ও স্থলবন্দরে এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর এ তথ্য জানিয়ে বলেন, নতুন কোনো রোগের তথ্য পাওয়া গেলে আমাদের বন্দরগুলোতে সতর্কতা জারি করা একটা রুটিন ওয়ার্ক। সেই হিসেবে আমরা সবগুলো বন্দরকে সতর্কতা নেওয়ার জন্য বলেছি। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সাধারণত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সর্বপ্রথম বানরের দেহে শনাক্ত হওয়া এ রোগটি ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এবং এর আগে আফ্রিকার বাইরে দেখা যায়নি। ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্য, স্পেন, পতু‌র্গাল, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও সুইডেন এবং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া এ পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের রোগী পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

বাংলাদেশ কী ধরনের সতর্কতা নিচ্ছে জানতে চাইলে অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ‘এটা সংক্রামক রোগ। এ কারণে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। প্রাথমিকভাবে মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হয়েছে। কোনো রোগী পাওয়া গেলে সেখানে আইসোলেশনে রাখা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বিমানবন্দরের মেডিক্যাল অফিসারদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কারো মধ্যে উপসর্গ থাকলে বা সন্দেহ হলে তাকে চিহ্নিত করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে বলা হয়েছে।

মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক উপসর্গ হচ্ছে জ্বর, মাথাব্যথা, হাড়ের জোড়া ও মাংসপেশিতে ব্যথা এবং অবসাদ। জ্বর শুরু হওয়ার পর দেহে গুটি দেখা দেয়। এসব গুটি শুরুতে দেখা দেয় মুখে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে হাত এবং পায়ের পাতাসহ দেহের অন্যান্য জায়গায়। এই গুটির জন্য রোগীর দেহে খুব চুলকানি হয়। পরে গুটি থেকে ক্ষত দেখা দেয়।

জলবসন্তেরই মতোই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও দেহে সেই ক্ষতচিহ্ন রয়ে যায়। রোগ দেখা দেওয়ার ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। সংক্রমিত রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে, ত্বকের ক্ষত থেকে এবং নাক, মুখ ও চোখের ভেতর দিয়ে এই ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বানর, ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, এমনকি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত বিছানাপত্র থেকেও এই ভাইরাস অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে। এই ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা নেই। তবে যে কোনো ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মতোই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে এর প্রকোপ রোধ করা যায়। মাঙ্কিপক্সের জন্য নির্দিষ্ট কোনো টিকাও নেই।

তবে গুটিবসন্তের ভাইরাসের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের জীবাণুর মিল রয়েছে। ফলে গুটিবসন্তের টিকা নেওয়া থাকলে তা মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধেও ৮৫ শতাংশ সুরক্ষা দিতে পারে। যেহেতু এ রোগ সাধারণভাবে প্রাণঘাতী নয়, তাই এটি নিয়ে উদ্বেগের তেমন কারণ নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে