ফজলি আম কার?

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২২; সময়: ১১:১৪ অপরাহ্ণ |
ফজলি আম কার?

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফজলি আম কার তা নির্ধারণ হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। এই আমের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৃথকভাবে দাবি করেছে। যার শুনানী মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। এর পর জানা যাবে ফজলি আম রাজশাহীর না চাঁপাইনবাবগঞ্জের।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের শুরু দিকে বাঘার ফজলি আম রাজশাহীর জিআই পন্য হিসেবে স্বীকৃতি জন্য আবেদন করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় তথ্য যুক্ত করে এ আবেদন করে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র। আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই বাছাই শেষে সবকিছু ঠিকঠাক থাকায় গত বছরের ৬ অক্টোবর বাঘার ফজলি আমকে রাজশাহীর নিজস্ব পণ্য হিসেব স্বীকৃতি দিয়ে জার্নাল প্রকাশ করে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর।

তবে ফজলি আম নিজেদের অঞ্চলের দাবি করে এই সিদ্ধান্তের উপর নারাজি দেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এ্যাসোসিয়েশন। আর এতেই জিআই সনদ আটকে যায় রাজশাহীর ফজলি আমের। আগামীকাল ২৪ মে মঙ্গলবার শুনানির মধ্য দিয়ে বিষয়টি নিস্পত্তি করতে চায় সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর।

বাঘার ফজলি আমের ইতিহাস কতো পুরোনো তা জানতে অনুসন্ধান করে একাত্তর টেলিভিশনের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রাশিদুল হক রুশো। এ নিয়ে তিনি একাত্তর টেলিভিশনে প্রতিবেদনও করেছেন।

রাশিদুল হক রুশো বলেন, রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের লাইব্রেরিতে পাওয়া পুরোনো কাগজপত্র খুঁজে পাওয়া যায় ১৯১২ থেকে ১৯২২ পর্যন্ত করা সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট অপারেশনস ইন দি ডিস্ট্রিক অব রাজশাহীর চূড়ান্ত প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদনের ১৬ নম্বর পৃষ্টায় ইংরেজীতে স্পস্টভাবে ‘দি বাঘা ম্যাংগো’ বা বাঘার আম যা কলকাতায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।

শুধু তাই নয় হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি মাহবুব সিদ্দিকীর ‘আম’ বইটির অষ্টম অধ্যায়ে আমের জাত বিভাগে ৯৭ পৃষ্ঠার তথ্য অনুযায়ী বাঘার ফজলির পরিচিতি অন্তত ২০০ বছরের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও ৫০০ বছর আগে নির্মিত রাজশাহীর বাঘার ঐতিহ্যাসিক শাহী মসজিদের অংশে টেরাকোটার কারুকাজেও দেখা মেলে আমের ছবি। এ থেকেও বুঝা যায় বাঘার ফজলি আমের ঐতিহ্য অনেক পুরোনো।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের ফল গবেষক ড. হাবিবুল আলম বলেন, বাঘার শাহী মসজিদের কারুকাজ করা এই আম ফজলি আমের প্রতিচ্ছবি। এতেও প্রমান হয় বাঘার ফজলি আমের ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। আমরা যে তথ্য প্রমান পেয়েছি ফজলি আম রাজশাহীর পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য যতেষ্ঠ।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্ত কৃষিবিদ ড. আলীম উদ্দীন বলেন, শুধু খাতা-কলমেই নয়, ভৌগলিক পরিচয় নিশ্চত করতে এরই মধ্যে বাঘার ফজলি আমের ডিএনএ পরীক্ষাও করা হয়েছে। তার প্রতিবেদনও জমা দেয়া হয়েছে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমের যে জাতের কথা বলা হচ্ছে তার সাথে বাঘা ফজলির স্বাদ, আকার, ওজনসহ অনেক পার্থক্য রয়েছে।

তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম মূলতে ভারতে মালদহ এলাকার। ২০০৮ সালে মালদহের ফজলি আম তাদের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ফলে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই ‘রাজশাহীর ফজলি আম’ ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পন্যের স্বীকৃতি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে