শেখ হাসিনা এ দেশের আলোকবর্তিকা: এস এম কামাল

প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২২; সময়: ৮:১৯ অপরাহ্ণ |
শেখ হাসিনা এ দেশের আলোকবর্তিকা: এস এম কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪১তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এসএম কামাল হোসেন বলেছেন, ‘১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসিত থেকে ১৯৮১ সালের এই দিনে দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে শেখ হাসিনাকে একনজর দেখার জন্য কুর্মিটোলা বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর এলাকাজুড়ে লাখো মানুষের ঢল নেমেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে দিশেহারা আওয়ামী লীগ পেয়েছিল আলোর দিশা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন দিনের আগমনী বার্তা। তাই তো সেদিনের মেঘের গর্জন, ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ প্রকৃতি যেন জাতির পিতার হত্যার বদলা নেওয়ার লক্ষ্যে গর্জে উঠেছিল। অবিরাম মুষলধারে ভারী বর্ষণে যেন ধুয়েমুছে যাচ্ছিল বাংলার মাটিতে পিতৃহত্যার জমাট বাঁধা পাপ আর কলঙ্কের চিহ্ন। স্বাধীনতার অমর স্লোগান-‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনি জনতার কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল, ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’।

মঙ্গলবার এ দিবস উপলক্ষে রাজশাহীর পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগি অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে আনন্দর‌্যালি শেষে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। তার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।’

এসএম কামাল হোসেন বলেন ‘শেখ হাসিনা দেশে এসেছিলেন বলেই অবরুদ্ধ গণতন্ত্র শৃঙ্খলামুক্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশে এসেছিলেন বলেই পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান, আগামী মাসেই এই সেতুর উদ্বোধন করা হবে। আজকের বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা একমাত্র শেখ হাসিনার কারণেই সম্ভব হয়েছে। তার দেওয়া রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে, ইনশাআল্লাহ। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রত্যাবর্তন হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও চেতনার। তার আগমনের মধ্য দিয়ে ফিরে এসেছিল বাংলার মানুষের স্বপ্ন ও সম্ভাবনা।

তিনি বলেন, তার নেতৃত্বে জাতির পিতার খুনি ও একাত্তরের নরঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন এবং রায় কার্যকর হয়েছে। তার সুযোগ্য নেতৃত্ব, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, মেধা-মনন, দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এক সময় দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করত সেই দেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ষড়যন্ত্রকারি বিএনপি, স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী বিএনপি, সেই বিএনপি শেখ হাসিনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে আসছে। কারণ তারা জানে বঙ্গবন্ধুকন্যা বেঁচে থাকলে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। শ্রিলংকার অর্থনৈতিক ধ্বস নামায় তারা আনন্দে টলমল। এটাই তাদের চরিত্র। তারা দেশের মানুষের ভাল চাই না। এরাই বলছে, বাংলাদেশ নাকি শ্রীলংকা হয়ে যাবে। বাংলাদেশ একদিন শ্রীলংকা হয়েছিল বাংলাদেশে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে। যেদিন পানি ও বিদ্যুতের জন্য সালাউদ্দিন দৌড় দিয়েছিল। শ্রীলংকা হয়েছিল বাংলাদেশে যেদিন সারের জন্য কৃষককে হত্যা করা হয়েছিল। শ্রীলংকা হয়েছিল বাংলাদেশে যেদিন জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন তখন ছাত্ররা কালো জুতা প্রদর্শন করেছিলেন। শ্রীলংকা হয়েছিল বাংলাদেশে ১৫ ফেব্রুয়ারী প্রহসনের নির্বাচন করেছিলো। জনগণের তোপের মুখে রাতের অন্ধকারে সংসদে পাশ করে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়েছে।

পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী এবং সাধারণ সম্পাদক ও নওহাটা পৌর মেয়র হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন। তিনি বলেন, বিএনপি কথায় কথায় বলে শেখ হাসিনার আর গদি থাকবে। আপনারা আসুন, মাঠে নামুন, দেখুন লড়াই করুন। আপনাদের টেবিল টকে শেখ হাসিনার গদি যাবে না। আমি আশা রাখছি আগামী নির্বাচনেও বিজয়ী হয়ে এই আসন শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারব।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলী খান ও আরজিয়া বেগম, নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল মাননান, কাটাখালি পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম রিপন, পবা উপজেলা যুবলীগ সভাপতি এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক তফিকুল ইসলাম, দর্শনপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভপতি কামরুল হাসান রাজ, হরিয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জেবর আলী, হরিপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান বজলে রেজবি আল হাসান মুঞ্জিল, হরিয়ান ইউপি’র চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ পবা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও সহযোগি অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে