জমি রেজিস্ট্রিতে ৫০০ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ লাগে : টিআইবি
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ভূমি অফিসে জমি রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত সেবা পেতে ৫০০ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় বলে দাবি করেছে দুর্নীতিবিরোধী গবেষণা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়েছে, জেলা রেজিস্ট্রার ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতে সেবা পেতে প্রতিটি পদক্ষেপে সেবাগ্রহীতাদের ৫০০ থেকে শুরু করে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবায় সুশাসনের ঘাটতি ব্যাপক, এ খাত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। বিভিন্নভাবে সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে অর্থ আদায় ও ঘুষ নেওয়া হচ্ছে। দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হচ্ছে। এখানে কিছু ব্যতিক্রম বাদে হয়রানি, জিম্মি করে অর্থ আদায়, দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। ভূমি নিবন্ধন আর দুর্নীতি সমার্থক হয়ে গেছে। এখানে নিয়োগ–পদোন্নতিতেও দুর্নীতি ব্যাপকতা পেয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এই দুর্নীতি বন্ধ করতে সদিচ্ছা জরুরি। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ভূমির ডিজিটাইজেশন করতে হবে। তিনি বলেন, দিনে দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এমন কোনো খানা নেই, যাদের ভূমির সেবা নিতে হয় না। এমন দৃষ্টান্ত খুব কম পাওয়া যাবে যে, কোনো খানা ভূমির দুর্নীতি–অনিয়মের শিকার হয়নি।
টিআইবি জানায়, দলিলের নকল তোলার জন্য সেবাগ্রহীতাদের ১ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। দলিল নিবন্ধনের জন্য প্রতিটি দলিলে দলিল লেখক সমিতিকে ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। জমির দাম, দলিল ও দলিলের নকলের ধরণ ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র থাকা না থাকার ওপর এবং এলাকাভেদে নিয়মবহির্ভূত অর্থ লেনদেনের পরিমাণ কমবেশি হয়।
টিআইবি দাবি করে, তাদের প্রতিবেদনটি মূলত গুণগত গবেষণা। দেশের আটটি বিভাগের ১৬টি জেলার ৪১টি সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে এবং জাতীয় পর্যায়ে নিবন্ধন অধিদপ্তর ও অংশীজনদের কাছ থেকে গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। গবেষক নিহার রঞ্জন রায় ও শাম্মী লায়লা ইসলাম গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সুলতানা কামাল, উপদেষ্টা (নির্বাহী) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) মোহাম্মদ রফিকুল হাসান।