রাজশাহীতে শুরু হয়েছে গুটি আম পারার উৎসব
নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া : বুধবার থেকে রাজশাহীতে আম পাড়া শুরু। রোববার জেলা প্রশাসন এই সময়সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছে । প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী রাজশাহীতে ১৫ মে বুধবার থেকে গুটি আম পাড়া যাবে।
দেশবাসীকে বিষমুক্ত ফল দিতে গত তিন বছর ধরে গাছ থেকে আম ভাঙার জন্য সময় বেঁধে দিচ্ছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। কিন্তু তীব্র তপদাহে সময়ের আগে অনেক আম পেকে গাছেই নষ্ট হয়ে যায়। এর ওপর ঝড় আর শিলাবৃষ্টির ধকল যাচ্ছে এবার রাজশাহীর আমের ওপর দিয়ে। তাই কিছুটা আগেই সময় বেঁধে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে পুঠিয়ায় নির্ধারিত সময়ের আগে আম পাড়ার অপরাধে ছয়জনকে কারাদন্ড- প্রদান করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পুঠিয়া উপজেলার আম চাষী মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা মেনে বুধবার থেকে আমরা আম বাজারজাত শুরু করেছি। গত বছরের চেয়ে এবার আগে বাজারে আম আসতে শুরু করবে। এবারও রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট বসছে পুঠিয়ার বানেশ্বরে। এই হাটে শুরুর দিনে অল্প কিছু গুটি জাতের আম বাজারে এসেছে। পর্যায়ক্রমে আমের পরিপক্বতা অনুযায়ী আম বাজারে আসবে। আর আম কেনাবেচায় ভরে উঠবে বানেশ্বরের বাজার। ব্যবসায়ী ও আম চাষিরা পুরোদমে প্রস্তুত আম পাড়া নিয়ে।’
সময়সূচি অনুযায়ী, সকল প্রকার গুটিআম বাগান থেকে পাড়া যাবে ১৫ মে বুধবার থেকে। আর গোপালভোগ আম পাড়া যাবে ২০ মে, রাণী পছন্দ ২৫ মে, খিরসাপাত ও হিমসাগর ২৮ মে, লক্ষ্মণভোগ ও লখনা ২৫ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৬ জুন, ফজলি ও সুরমা ফজলি ১৬ জুন এবং আশ্বিনা ১ জুলাই থেকে আম পাড়া যাবে।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ওলিউজ্জামান জানান, নির্ধারিত সময়ের আগে কেউ আম পাড়লে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের প্রসাশনের সব সময় নজরদারি থাকবে। আমরা নির্ধারিত জাতের যে আম যে সময় বেধে দেওয়া হয়েছে তার আগে যেন কোন আম বাজারে না আসে সে দিকে সব সময় নজরদারি থাকবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার একেএম মনজুরে মাওলা বলেন, জেলা প্রসাশন সময় বেধে দিয়েছে আমরা কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তা সে বিষয়ে আম চাষীদের পরামর্শ দিচ্ছি যেন সময়েক আগে কোন আম বাজার জাত না হয়। কোন রকম যেন এই রাজশাহীর আম নিয়ে বদনাম না হয় আমরা সে দিকে সময় চাষীদের নিয়মের মধ্যে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।
আমকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য পাল্টে দিয়েছে এ অঞ্চলের গ্রামীণ জনপদের অর্থনীতি। রাজশাহী অঞ্চলের দুটি বড় আমের মোকাম রাজশাহীর বানেশ্বর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট বাজার মিলিয়ে প্রতিদিন বেচাকেনা হয় প্রায় দুই কোটি টাকার আম। আমের কারবার নিয়ে রাজশাহী অঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মৌসুমি কর্মসংস্থান হয়। গাছের আম নামানোর কামলা থেকে আম পরিবহন, আম চালানের ঝুড়ি বানানো এবং বাজারগুলোয় আম সংশ্লিষ্ট নানা কাজে এসব মানুষ ব্যস্ত সময় কাটায়। রাজশাহীর কুরিয়ার সার্ভিসগুলোও এ সময় আম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠে।