পাবনায় গৃহবধুকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরে পারিবারিক কলহের জেরে শাজিন খাতুন ওরফে শজি খাতুন (৩২) নামের এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শ^শুড় বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় গৃহবধু শজি খাতুনকে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসাপাতাল, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ শজি খাতুনের পিতা বাদী হয়ে আমিনপুর থানায় মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গৃহবধুর ননদ সামেলা খাতুন (৪০) কে আটক করেছে পুলিশ।
আটক সামেলা উপজেলার মাসুমদিয়া ইউনিয়নের তালিমনগর গ্রামের কোকিল সরদারের স্ত্রী। আর অগ্নিদগ্ধ শজি খাতুন একই গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী ছুরমান মন্ডলের স্ত্রী।
আমিনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুল ইসলাম (পিপিএম) জানান, ছুরমান মন্ডল কয়েক বছর ধরে মালয়েশিয়া থাকেন। সেখান থেকে তিনি প্রতি মাসে তার বোন সামেলা খাতুনের একাউন্টে টাকা পাঠান। সেই টাকা থেকে সংসার খরচ বাবদ ননদ সামেলা খাতুন প্রতি মাসে মাত্র ৩ হাজার টাকা করে দেন শজি খাতুনকে। অল্প টাকায় সংসার চালানো সম্ভব না হওয়ায় এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে শ^াশুড়ী-ননদদের সাথে কলহ দেখা দেয় শজি খাতুনের।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে শ্বাশুরি শরীফা খাতুন, ননদ সামেলা খাতুন ও ভাসুরের বউ কাঞ্চন খাতুন সহ অন্যান্যরা মিলে শজি খাতুনের শরীরে কেরোসিন তেল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে উল্লাস করতে থাকে। এ সময় শজি খাতুনের চিৎকারে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবষ্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানাান্ত করা হয়। খবর পেয়ে আুিমনপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার পর অগ্নিদগ্ধ শজি খাতুনের পিতা ফজিবর মন্ডল বাদী হয়ে নয় জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ২ থেকে ৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে।
ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ননদ সামেলা খাতুনকে গ্রেফতার করে। জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এদিকে শজি খাতুনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর পর তার চিকিৎসার সর্বিক খোঁজ খবর নিতে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুল হক, ওসি অপারেশন হাফিজুর রহমান পাবনরা জেনারেল হাসপাতালে যান এবং নিজ দায়িত্বে গুরুত্বর আহত শজি খাতুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. গৌতম কুমার জানান, আগুনে গৃহবধুর শরীরের পঞ্চাশ ভাগের বেশি পুড়ে গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে।