বাঘার হাট বাজারে নিম্নমানের খেজুর, বাজারে নেই টিসিবি’র পণ্য
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : বাঘার বিভিন্ন বাজারগুলোতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিম্নমানের খেজুর। ক্রেতাদের ঠকাতে অনেকেই মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। রমজান মাসে ব্যাপক চাহিদাকে পুজি করে সৌদি আরব বা বিদেশ থেকে আমদানী করা হয়েছে মর্মে মেয়াদ উত্তীর্ণ ভেজাল খেজুরগুলো আকর্ষণীয় প্যাকেটে বিক্রি করে মুনাফা লুটে নিচ্ছে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী। এসব খেজুরের প্যাকেটে মেয়াদের কোন তারিখ উল্লেখ না থাকার ফলে ক্রেতারা জানতে পারছেন না কেনা খেজুরগুলো স্বাস্থ্য সম্মত কিনা।
এমন কিছু প্রতারণা হাতেনাতে ধরা পড়েছে। মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, অতিরিক্ত মূল্য আদায় ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির দায়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। রমজানের ১ম দিন থেকে তৃতীয়দিন অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি দোকানে জরিমানা করা হয়। উপজেলা সহকারি কমশিনার (ভূমি) ও নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন এই অভিযান পরিচালনা করেন। ম্যাজিষ্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন বলেন, পবিত্র রমজান মাসকে টার্গেট করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটে নিচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাত থেকে অভিজাত বিপনী বিতান ও ইফতারের দোকান গুলোতে বিভিন্ন স্তরের খেজুর রাখা হয়েছে। রয়েছে দামের তারতম্য। এ সব খেজুরের অধিকাংশই বাজারে আসার আগে বড় বড় গুদামে মজুদ করা। যার নির্দিষ্ট তাপমাত্রা না থাকার কারণে এসব খেজুর খাবার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও পঁচা ফলমূলও বাজারে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারে এসব খেজুর বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৪০ থেকে ২০০ টাকা দরে। অন্যদিকে ঝুড়িতে খোলা অবস্থায় রাখা খেজুর ১৭০-১৯০ টাকা, পলিথিনের প্যাকেটজাত ২২০-২৫০ টাকা। অন্যদিকে খোলাবাজারে টিসিবি’র খেজুর বিক্রি করতে দেখা যায়নি।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্য থেকে কখন খেজুর আসে তা তারা জানেন না। তারা রমজান মাসে খেজুর কিনে দোকানে মজুদ করে রাখে এবং খুচরা বিক্রি করে থাকেন। ক্রেতা মিলন ও শাহাজান জানান,রমযানের প্রথম দিনে নিম্নমানের খেজুর বেশি দাম দেখে কম পরিমাণে কিনেছেন।
ক্রেতাদের অভিযোগ, রমজানে পণ্যের দাম নির্ধারণ করে খোলা বাজারে যেসব পণ্য বিক্রি করা কথা সেগুলোও বিক্রি করছেনা টিসিবি। ডিলার ফজলুর রহমান জানান,বাজার মূল্যের চেয়ে টিসিবি’র পণ্যর দাম খুব একটা কম না হওয়ায় তিনি মালামাল উঠাননি।
বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা.রেজাউল করিম বলেন, ক্ষতিকর এ খেজুর জনস্বাস্থ্যের জন্য জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। নিম্নমানের কিংবা বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো খেজুর খাওয়ার কারণে মানুষের পেটের পীড়া, কিডনিজনিত রোগসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, খেজুর ব্যবসায়ী ছাড়াও ফুটপাতে ইফতার সামগ্রী বিক্রেতাদের সতর্ক করা হয়েছে। একই সাথে জরিমানাও করা হয়েছে। অভিযানে ভোক্তাদের সাথে প্রতারণা না করার জন্য হুশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। পবিত্র রমজান উপলক্ষে রোজাদারদের জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা যেন ফায়দা লুটতে না পারে সে ব্যাপারে তৎপর রয়েছি। পবিত্র রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান নির্বাহি অফিসার।