রহমত ও বরকতের মাস রমজান
হোছাইন আহমাদ আযমী : রমযান মাস, বান্দার জন্য আল্লাহ তায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। এ মাসের প্রতিটি রাত-দিনকে আল্লাহ তায়ালা রহমত, বরকত, মাগফেরাত দ্বারা পূর্ণ করে রেখেছেন। তাকওয়া অর্জন অনুশীলনের জন্য এবং ইবাদত বন্দেগী ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সমস্ত আমলের জন্য এই মাসটি হল ঋতুরাজ বসন্তকাল।
শুধু তাই নয়, এই মাস এমন মাস যে মাসে ঈমানের দৌলতে ধন্য মুমিনের উপর রহমতের বৃষ্টি মুষলধারে বর্ষিত হয়। এ মাসে রোযা রাখা ফরয। রাতে তারাবীর নামায আদায় করা সন্নত। এ বিষয় দুটি আমরা সকলেই জানি। কিন্তু রমযানের হক শুধু এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং রমযান আমাদের কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু দাবী করে। তাইতো আল্লাহর রাসুল (স.) সাহাবীদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন “রমযান মাস আগত প্রায়, যা অত্যন্ত রহমত ও বরকতের মাস।
আল্লাহ তায়ালা এই মাসে তোমাদের প্রতি স্বীয় দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন এবং খাস অনুগ্রহ তোমাদের উপর বর্ষন করেন, ভুলত্রুটি ক্ষমা করেন, দুআ কবুল করেন এবং ইবাদতের প্রতি তোমাদের আগ্রহ দেখতে থাকেন আর ফেরেশতাদের নিকট গর্ব করেন । সুতরাং তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে নিজের সৎকর্ম দেখাও। ঐ ব্যক্তি সত্যিই হতভাগা যে রমযান মাস পেল কিন্তু তার রহমত থেকে বঞ্চিত থাকল”।
আরো সুখকর বিষয় হচ্ছে, যে ইবলিসের পাল্লায় পড়ে মানুষ পাপ-পঙ্কিলতায় জড়িয়ে পড়ে। যার পাতানো ফাঁদে আটকে মানব সমাজ পদস্খলিত ও পথভ্রষ্ট হয়ে বিপথগামী হচ্ছে অহর্নিস। সেই অভিশপ্ত ইবলিসকে এ মাসে শৃংখলাবদ্ধ করে রাখা হয়। ফলে নির্দিধায় নেক কাজ করার পথ মানুষের জন্যে সুগম হয়ে যায়।
বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে রোযা-৩
ডাঃ মুহাম্মদ তারেক মাহমুদ আরো বলেন, আমেরিকান জনৈক এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত হলে সে আমাকে বলল আমি রোযা রাখি। তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি তো অমুসলিম। তুমি কেন রোযা রাখ? সে বলল, আমার রোযা রাখার কারণ হলো, বছরে কিছু সময় মানুষের এমন উপবাস অবস্থায় কাটানো উচিত। যেন ডায়েটিং কওে তার হজম প্রক্রিয়াকে (Digestive System) কিছু সময়ের জন্য অবসর রাখে। এমনিভাবে তার মধ্যে আদ্রতা, যা সময় সাপেক্ষে বিষে (Poison) পরিণত হয়ে যায়। রোযা রাখার দ্বারা তা নিঃশেষ হয়ে যায়। আর এ মারাত্মক আদ্রতা নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার ফলে অনেক জটিল জটিল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এভাবেই হজম প্রক্রিয়া পূর্ব অপেক্ষা শক্তিশালি হয়ে উঠে। এ কারনে আমরা স্বামী স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা প্রতি মাসে রোযা ডায়েটিং (Diteing) করব। আমি বললাম, আমাদের দীন ইসলাম আমাদেরকে এ পদ্ধতিতে রোযা রাখার নির্দেশ দিয়ে বলেছে, প্রতি মাসে আইয়ামে বিযের তিনটি রোযা রাখবে। বিশেষ করে অবিবাহীত লোকজন। কেননা এতে তাদেও মধ্যে শৃংখলা (Discipline) সংযম ও ধৈর্যশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কুপ্রবৃত্তি দমনে সহায়ক হয়। (মাওয়ায়েযে নকশবন্দী)