চলন্ত ট্রেনে পাথরের আঘাতে দুই শিশু মারাত্মক জখম

প্রকাশিত: মে ৬, ২০১৯; সময়: ৫:৩১ pm |

নিজস্ব প্রতিবেদক : ট্রেনে দুস্কৃতিকারীর ছোড়া পাথরের আঘাতে পৃথক দুই ঘটনায় দুই শিশু মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দুই শিশুই মাথার আঘাত গুরুত্বর বলছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে দুস্কৃতিকারীদের খুজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়ে আহত শিশুদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার কথা জানিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম। আর দোষীদের কঠোর শাস্তির আওত্বায় এনে যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আহত শিশুদের স্বজনেরা।

রোববার বিকেল ৪টায় পদ্মা এক্সপ্রেসে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে পরিবারের সঙ্গে যাত্রা করছিলেন চার বছরের শিশু জিসান। সন্ধ্যা নাগাত জামতৈল স্টেশন পার হবার পরপরই চলন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে দুস্কৃতিকারীর ছোড়া একটি পাথর সরাসরি এসে লাগে শিশু জিসানের মাথায়। সাথে সাথেই শুরু হয় প্রচন্ড রক্তপাত। প্রথমে সিজানকে নেয়া হয় সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হলে পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিকেলে।

জিসানের বাবা আবদুস সালাম জানান, ছোড়া পাথরের আঘাতে রক্তাক্ত জিসানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের ৩০ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রোববার রাতে জিসানের মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। শিশুটি এখনও আশঙ্কামুক্ত কিনা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা।

রোববার চিকিৎসার জন্য রকেট মেইলে ভেড়ামারা থেকে রাজশাহী আসার পথে পাকশী-ঈশ^রদীর মাঝামাঝি পাথরের আঘাতে আহত হন ১৪ বছরের আরেক শিশু জুঁথি। সেও মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে সঙ্গাহীন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রাজশাহী মেডিকেলে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি রিজিস্ট্রার চিকিৎসক সাইদুজ্জামান বলেন, আহত দুই শিশুর অবস্থাই শঙ্কামুক্ত নয়। তাদের ৭২ ঘন্টা পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। এর পর নিশ্চিত হওয়া যাবে তাদের অবস্থা সম্পর্কে।

এদিকে, সোমবার দুপুরে আহত শিশুদের দেখতে হাসপাতালে যান পশ্চিমাঞ্চল রেলের মাহব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম। এসময় তিনি আহত শিশুদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার পাশাপাশি দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান।

তিনি জানান, গত এক বছরে চলন্ত ট্রেনে ৩০টির মত পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয় ১৭ জন। যাদের মধ্যে গত বছর নিহত হন এক রেল কর্মকর্তা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম বলেন, রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী পথে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বেড়ে গেছে। ফলে ট্রেন চলাকালীন জানালা বাধ্যতামূলকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে দায়িত্বরতদের। পাশাপাশি পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অনিষ্টকারী দুর্বৃত্তদের শিগগিরই চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রেলওয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রেলযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, এ পথে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি রেলের যাত্রীও বেড়েছে। তবে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা চলতে থাকলে যাত্রীরা ট্রেনবিমুখ হয়ে পড়বে। এতে বরং সরকারই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি দ্রুত পাথর নিক্ষেপকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে