নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা থেকে আসা মানুষদের কারণে সংক্রমণের ঝুঁকিতে মোহনপুর

প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২০; সময়: ৭:১১ অপরাহ্ণ |
নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা থেকে আসা মানুষদের কারণে সংক্রমণের ঝুঁকিতে মোহনপুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, মোহনপুর : প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ জেলাকে চিহ্নিত করার পর থেকেই গোপনে গ্রামের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন সেখানে বসবাস করা শ্রমজীবিরা। কোনোভাবেই তাদের আটকানো যাচ্ছে না। ফলে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় ফিরে আসা এসব মানুষদের কারণে করোনা সংক্রমনের ঝুকি বাড়ছে।এতে স্থানীয়রা করোনা সংক্রমনের ভয়ে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

আইইডিসিআর এর তথ্য মতে,১১ এপ্রিল শনিবার পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮২ জনে মারা গেছেন ৩০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরেছেন ৩৩ জন। এ উপজেলায় করোনা উপসর্গে ৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল।পরীক্ষা শেষে জানা যায়,আল্লাহর অশেষ রহমতে তারা কেউ করোনা আক্রান্ত নয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো:আরিফুল কবির। জেলার কোথাও করোনা শনাক্ত হয়নি বলে জানা গেছে।

এদিকে ঢাকা,নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যক্তিদের নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় পড়েছে এখানকার ঘরবন্দী কর্মহীন মানুষরা । প্রশাসনের কঠোর নজরদারির পরেও ঠেকানো যাচ্ছে না প্রবেশ। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশি চেকপোস্ট থাকলেও গ্রামের প্রবেশের বিকল্প রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করেছেন তারা। তাদের কতজন উপজেলার বিভিন্ন ফিরেছেন এর সঠিক তথ্যও জানা নেই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। তবে এলাকায় ফেরত ব্যক্তিদের তথ্যের ভিত্তিতে খোঁজ খবর নিয়ে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন,সেনাবাহিনী ও পুলিশ।মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোস্তাক আহম্মেদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গোপনে ফিরতে শুরু করেছেন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ও বিভিন্ন জেলার বসবাস করা শ্রমজীবীরা। রাস্তা ঘাট লকডাউন উপেক্ষা করে অনেকেই পন্যবাহী যানবাহন কিংবা মাছের ট্রাকে ড্রামে লুকিয়ে রাতের আধাঁরে ফিরছেন গ্রামের বাড়িতে। খোঁজ পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশ তাদের বাড়ীতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য জোর তাগিদ দিলেও পুলিশ চলে আসার পর হোম কোয়ারেন্টিন না মেনেই অবাধে ঘোরাফেরা করছেন তারা। পাড়ার দোকান ও হাট-বাজার গুলোতে চলাফেরা করছেন। এমনকি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেনা কেউ কেউ। তবে কেউ কেউ স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন বলেও জানা গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে করোনার সংক্রমণ বিস্তারে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে এ জনপদের মানুষ। বিশেষ করে গা ঢাকা দেওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি। অনেকেই এলাকায় ফিরে প্রশাসনের ভয়ে আত্মীয়ের বাড়ি অবস্থান করছে। তবে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ব্যক্তিদের মাধ্যমে সংক্রমনের ভয়ে আতঙ্ক ও উৎকন্ঠায় রয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সচেতন মহলের কেউ কেউ মনে করেন, প্রবাসী ও বিভিন্ন জেলা হতে আগতদের তালিকা তৈরী করে প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদের প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করলে বহুলাংশ্যে করোনা সংক্রমনের ঝুকি এড়ানো যেতো।

এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডা:মো:নাদিম মোস্তফা বলেন, ডায়াগনস্টিক কিট এবং একই দিনে অনেকগুলা টেস্ট করার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির অপ্রতুলতার জন্য চিকিৎসকের দ্বারা এক্সক্লুডের মাধ্যমে রোগী শনাক্ত করে টেস্ট করায় আপাতত ঠিক আছে। তবে এন্টিবডির মাধ্যমে দ্রুত এবং সাশ্রয়ে টেস্টিং প্রক্রিয়া চালু হইলে বিদেশ বা বাইরের জেলা ফেরত দের করে আলাদা করতে পারলে সবচেয়ে ভাল হতো ।

এ ব্যাপারে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানওয়ার হোসেন বলেন,আমরা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ব্যক্তিদের ঘরে অবস্থান করতে বলছি। এ পর্যন্ত যারা এসেছে তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তবে, কেউ যদি কোয়ারেন্টিনে না থেকে বাহিরে বের হয় তাহলে তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে