ভাইরাস ঠেকাতে রাজশাহীর রাস্তায় কঠোর সেনা সদস্যরা

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২০; সময়: ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ |
ভাইরাস ঠেকাতে রাজশাহীর রাস্তায় কঠোর সেনা সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। গত ২৬ মার্চ থেকে এই ছুটি শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার ফাঁকা থাকলেও কয়েকদিন মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে যায়।

বিশেষ করে গত বধুবার থেকে প্রায় সারাদেশে বেড়ে যায় মানুষের মানুষ চলাচল। এ অবস্থায় সরকারের পদক্ষেপ ও স্বাস্থ্য বিধি বাস্তবায়নের জন্য কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দেয় সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহীসহ সারাদেশে সেনাবাহিনীর টহল ও তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মানুষকে ঘরে রাখতে শনিবার সকাল থেকে রাজশাহীর রাস্তায় নামে সেনাবাহিনী। তারা কঠোর অবস্থান নিয়ে লোকজনের চলাচলে নজরদারি করে। গাড়ি দিয়ে রাস্তা ঘিরে দিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা লোকজনকে বের হওয়ার কারণ যানতে চান এবং অনেককে ঘরে ফিরে যেতে বলেন। সোনাবাহিনীর এই তৎপরতায় শনিবার রাজশাহীর রাস্তায় কমেছে মানুষের চলাচল।

রাজশাহী সিভিল সার্জনের তথ্যমতে, গত মার্চ মাসে রাজশাহীতে বিদেশ থেকে এসেছে দুই হাজার ৯৫৯ জন। এর মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয় এক হাজার ৮০ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৩১৪ জন। আর ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৭৬৬ জনকে।

এদিকে, গত ১ এপ্রিল থেকে রাজশাহী মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে চালু করা হয়েছে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব। শুক্রবার পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলের আটজনের নমুনা সংগ্রহ করে এ ল্যাবে পাঠানো হয়। তবে পরীক্ষা করা হয়েছে পাঁচজনের। এখন পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগের কারও শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া পায়নি।

দেশের ১০টি জেলায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। শুক্রবার পর্যন্ত সনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ৬২ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ছয়জন। সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ২৬ জন। দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ১৪টি ল্যাব চালু করা হয়েছে।

যে ১০ জেলায় করোনাবাইরাসের বিস্তার ঘটেছে সেই জেলাগুলো হলো ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর, গাজীপুর, কুমিল্লা, কক্সবাজার, গাইবান্ধা, চুয়াডাঙ্গা ও চট্টগ্রাম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিস্তার ঘটেছে ঢাকায়; এরপরই আছে মাদারীপুর। আক্রান্তদের মধ্যে নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যাই বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আইইডিসিআর-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও এ সংক্রান্ত তথ্য দেয়া রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ১৬ জন বিদেশ ফেরত। মূলত তাদের মাধ্যমে দেশে করোনার সংক্রমণ ঘটেছে। বিদেশফেরতদের মধ্যে ইতালির ৬ জন, যুক্তরাষ্ট্রের ৩ জন, সৌদি আরবের দুইজন এবং ভারত, ফ্রান্স, জার্মানি, কুয়েত ও বাহরাইনের একজন করে রয়েছেন।

দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। তিনি মাদারীপুরের বাসিন্দা। এরপর রোগী শনাক্ত হয় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে। প্রাথমিক অবস্থায় এটি বিদেশফেরত ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ধীরে ধীরে তা স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

সম্প্রতি ব্রিফিংয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কয়েক জনের সংক্রমণের উৎস পাওয়া যায়নি। ভাইরাসটি স্থানীয় পর্যায়ে ছড়ালেও তা খুবই কম মাত্রার বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সাধারণত সংক্রমণের উৎস পাওয়া না গেলে এটিকে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বলা হয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে