মুজিব বর্ষে সাজা মওকুফ ও মুক্তির আশায় ১শ’২৬ কয়েদি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০; সময়: ৮:৪৪ অপরাহ্ণ |

নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর : আগামী ১৭মার্চ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকি ও মুজিব বর্ষে সাজা মওকুফ ও মুক্তির আশায় বুক বেধেছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০বছরেরও অধিক সময় ধরে বন্দি ১শ’২৬কয়েদি।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এসব বন্দির সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে মুক্তির আবেদন করা হয়। বন্দিদের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সম্প্রতি এসব বন্দির মুক্তির জন্য কারা সদর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে একটি তালিকা ও সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দির মধ্যে ১শ’২৬ বন্দি রেয়াতসহ ২০বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। এদের বয়স ৫০বছর থেকে শুরু করে ৮২বছরের বৃদ্ধও রয়েছেন।

কারা কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা গেছে, কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী কোনো যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত বন্দী তার সাজার মেয়াদের ২০বছর সাজা খাটলে সেই বন্দী মুক্তির আবেদন করতে পারেন। এসব বন্দিদের বয়স আচার-আচরন মামলার ধরনসহ সেই বন্দির বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ না থাকে তবে সরকার চাইলে বিশেষ সুবিধায় এবং বিশেষ বিশেষ দিবসে তাদের মুক্তি দিতে পারেন। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে ৫৬৯ ধারায় মুক্তির প্রক্রিয়টি বন্ধ থাকায় এখনো মুক্তি পাননি এসব বন্দিরা।

ফলে যাদের ৩০বছরের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ছিলো তাদের মধ্যে ১শ’২৬বন্দি ২০বছরেরও বেশী সময় ধরে সাজা ভোগ করছেন এর মধ্যে বেশীর ভাগ বন্দি ২২বছর থেকে ২৬বছর পর্যন্ত কারাভোগ করা হয়ে গেছে। আবেদন করেও তারা এখন পর্যন্ত ছাড়া পায়নি। এঅবস্তায় অনেকেই বৃদ্ধ হয়ে গেছে, বাইরে বের হয়ে আর কোন কিছু করার মত পরিস্থিতিতে নেই তারা। অন্তত মানবিক কারণে হলেও বিবেচনায় এসব বন্দিদের মুক্তি দেয়া যেতে পারে বলে মনে করেন মানবাধীকার কর্মিরা। ৫৬৯ ধারায় মুক্তি না পাওয়ায় বন্দিদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে এবং এঅবস্থায় বন্দিদের অর্জিত অধিকার উপেক্ষিত হচ্ছে বলে মনে করেন মানবাধীকার কর্মিরা।

অপর দিকে কারা কর্তৃপক্ষ বলছেন এসব বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি বন্দিদের সুযোগ নয়, এদের মুক্তির বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও সরকারের বিবেচনার ওপর নির্ভর করে। ২০ বছর সাজা খেটেছেন এমন কয়েদিদের মধ্যে যারা খুব অসুস্থ, অক্ষম বা বৃদ্ধ তাদের জন্যই এ ধারা প্রযোজ্য। এ ছাড়া কেউ খুব ভালো আচরণ করলে তার ক্ষেত্রেও ধারাটি প্রয়োগ হতে পারে। নাম প্রকাশ না করার সর্তে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়া একাধীক হাজতী বলেন, জেল খানার পরিবেশ আগের চেয়ে কিছুটা ভালো হয়েছে, ২০ বছর ধলে জেল খাটছেন এমন অনেক কয়েদি বৃদ্ধ হয়েগেছে, সেই সাথে তাদের আচরন এখন অনেক ভালো, তারা বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকিতে মুক্তির আশায় প্রহর গুনছেন।

তবে, আগামী ১৭মার্চ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকি ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সরকার ৫৬৯ ধারায় এসব বন্দিদের মুক্তি দিবেন এমন আশায় মুক্তির প্রহর গুনছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০বছরেরও বেশী সময় ধরে বন্দি থাকা ১শ’২৬ কয়েদি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে