আইইবি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান সম্পাদক প্রার্থী রনি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০; সময়: ৭:২৪ অপরাহ্ণ |
আইইবি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান সম্পাদক প্রার্থী রনি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বিগত দিনগুলোতে প্রকৌশলীদের কল্যাণ, উন্নতি এবং ঐক্য সৃষ্টিতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ-আইইবি রাজশাহী কেন্দ্র পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এই কেন্দ্রের প্রকৌশলীদের মধ্যকার এক বিশেষ পেশাভূক্ত শ্রেণির কল্যাণ এবং কর্তাব্যক্তিদের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত হয়েছে। যার কারণে কেন্দ্রটি আজ বিলীন হয়ে যাবার দ্বারপ্রান্তে। তাই আমি নির্বাচিত হলে সকল মতের প্রকৌশলীদের নিয়ে গতিশীল, আধুনিক ও সময়োপযোগী আইইবি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই।’

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজশাহী নগরীর একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রের মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী সাবেক ছাত্রলীগ সমর্থিত প্যানেলের আসন্ন নির্বাচনে সম্মানী সম্পাদক প্রার্থী প্রকৌশলী মুফতি মাহমুদ রনি এই উদ্যোগের কথা জানান। এসময় তিনি প্রকৌশলীদের কল্যাণার্থে ছয়দফা নির্বাচনি ইশতেহার তুলেন ধরেন।

লিখিত বক্তব্যে মুফতি মাহমুদ রনি জানান, সকল প্রকৌশলীর বিশেষ করে নতুনদের মধ্যে আইইবি বিমুখ হবার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিগত ২০১৬-২০১৭ কমিটিতে আমাদের ভোটার সংখ্যা ছিল ৭৫৪ জন যা কমে গিয়ে বর্তমানে প্রায় ৬৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। রাজশাহীর আইইবি ভবনে গতিশীল কার্যক্রম না থাকার কারণে সন্ধ্যার পর অন্ধকারাচ্ছন্ন আইইবি ভবন ও এর আশেপাশে দেদারছে চলে বহিরাগত মাদকসেবীদের আড্ডা। যার কারণে অধিকাংশ প্রকৌশলী কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তাই আমরা চোখের সামনে একটি প্রতিষ্ঠানকে এভাবে ধ্বংস হতে দিতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় প্রকৌশলীরা সকলেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দেশের অন্যান্য পেশাজীবীদের মধ্যে প্রকৌশলীরাই সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার। সম্প্রতি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারি প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলামকে এক ঠিকাদার শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও এর আগে রেজাউল ইসলাম নামে এক প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য দায়ী গতিহীন ও অনৈক্য রাজশাহী কেন্দ্র আইইবি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে এত দিন অতিক্রান্ত হলেও আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রের নতুন ভবনের একটি তলাও পূর্ণতা লাভ করেনি। বর্তমান কমিটিকে (২০১৮-২০১৯) ঢাকা কেন্দ্র থেকে কনভেনশন আয়োজন করার অনুরোধ করলেও অদক্ষতার কারণে এই নেতৃত্ব তা আয়োজন করতে পারেনি। গত চার বছরে অর্থাৎ গত দুই মেয়াদে (২০১৬-২০১৭ ও ২০১৮-২০১৯) আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রে মাত্র দুটি সেমিনার হয়েছে। এএমআই পরীক্ষার্থীর জন্য কোন ক্লাশ বা পরীক্ষার আগে প্রস্তুতির কোন ব্যবস্থা থাকলে তাদের উপকার হত। কিন্তু কষ্টের বিষয় বর্তমান কমিটি আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রকে একটি সমিতি বানিয়ে ফেলেছে। কিন্তু আইইবি কোন সমিতি নয়। এটি একটি প্রতিষ্ঠান। আইইবির এখতিয়ার রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কমিটিতে নিজস্ব প্রতিনিধি নিযুক্ত করার। তবে বিগত কমিটিগুলোর অদক্ষতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে নিয়মিত গোলটেবিল ও পারস্পরিক মতবিনিময় আয়োজন করা গেলে পেশাগত উৎকর্ষতা সাধনের পাশাপাশি রাজশাহীর উন্নয়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা উঠে আসত, যা বিগত দিনে সম্ভব হয়নি।

এসময় রনি তার ৬ দফা নির্বাচনি ইশতেহার তুলে ধরেন। এগুলো হলো- সিন্ডিকেট ভেঙ্গে সকল পেশায় নিযুক্ত প্রকৌশলীদের সংগঠন হিসেবে আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রকে গড়ে তুলে সকল একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সেবাপ্রক্রিয়া ডিজিটালাইজড; দেশ-বিদেশের যেকোন স্থানে প্রকৌশলীরা যাতে আক্রান্ত বা শারীরিক নির্যাতনের শিকার না হয় সেজন্য পারস্পারিক বন্ধন সুদৃঢ় করে প্রকৌশলী সমাজকে একত্রিকরণ; ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ট্রেনিং কোর্স করার ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে বিদেশে ট্রেনিং-এর জন্য এই কেন্দ্র থেকে আইইবি সদর দপ্তরে সুপারিশ পেশ; তদন্ত কমিটি গঠন করে বিগত দিনে নতুন ভবন নির্মাণে বিলম্ব হবার কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন ভবনের অন্তত দুটি তলা সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়া; অবহেলিত রাজশাহী কেন্দ্রের উপ-কেন্দ্রগুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ পাবনা ও সিরাজগঞ্জ উপকেন্দ্রের নিজস্ব ভবনের জন্য জোরালো ভূমিকা নেওয়া। সর্বোপরি সকলকে সাথে নিয়ে আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী সাবেক ছাত্রলীগ সমর্থিত প্যানেল থেকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রকৌশলী মির্জা মোতাছিম বিল্লাহ, রুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের প্রধান ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ রুয়েট শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান রিপন, কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য প্রার্থী প্রকৌশলী প্রফেসর ড. মিয়া মো. জগলুল সাদত, স্থানীয় কাউন্সিলর সদস্য প্রার্থী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ, প্রকৌশলী মো. সামিউল ইসলাম, প্রকৌশলী এবিএম আসাদুজ্জামান সুইট, প্রকৌশলী মো. মামুনুর রশিদ, প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান, ড. প্রকৌশলী মো. আলী হোসেন, প্রকৌশলী মো. শাহানুর আলম ও প্রকৌশলী দুর্জয় আরজু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অন্যদের মধ্যে বিটিসিএল রাজশাহীর ম্যানেজার প্রকৌশলী সাদেকুর রহমান মাবুদ, রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সাঈদ, নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহমুদুল হাসান রনি, রুয়েট শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নাঈম রহমান নিবিড়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক আশিক হোসেন দিপু, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ইয়াসির আরাফাত সৈকত, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম মাহমুদুর রহমান দীপন, রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের জিয়া হল শাখার সাবেক সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন শাহ্ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

https://youtu.be/qEwLjGorEns

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে