রাজশাহীতে থামছে না যৌন নিপীড়ন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০; সময়: ২:০৬ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে থামছে না যৌন নিপীড়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্কুল-কলেজের বাইরে বখাটেদের নোংরা উক্তি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহপাঠীর বাঁকা চোখ অথবা শিক্ষকের অনৈতিক দৃষ্টি। প্রতিনিয়ত এভাবেই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে নারী শিক্ষার্থীদের। অথচ ১৩ বছর আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

কিন্তু রাজশাহীতে আজও তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। নারী নেত্রীদের অভিমত, হয়রানিমুক্ত পরিবেশের জন্য প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ জরুরি। জেলা প্রশাসন বলছে, দ্রুতই যৌন নির্যাতন বিরোধী কমিটি কার্যকরী করা হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ উন্নয়ন সংস্থা লফসের তথ্য মতে, গেল ছয় মাসে রাজশাহীতে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২২টি।

গত ২৪ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর ধর্ষণের শিকার হন। ধর্ষক একই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র মাহফুজুর রহমান। এ ঘটনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারো সহযোগিতা না পেয়ে আইনগত ব্যবস্থার জন্য ভুক্তভোগী দ্বারস্থ হন অভিভাবকের।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের অভিযোগ, সহপাঠী, শিক্ষক কিংবা কর্মকর্তাদের দ্বারা যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে পাশে থাকে না সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ কেউ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন আচরণে, আড়ালে-আবডালে বাড়ছে ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন নির্যাতনের ঘটনা। কিন্তু ছাত্রীদের আত্মসম্মানের ভয়ে অপ্রকাশিত থেকে যাচ্ছে সেগুলো।

এক মেয়ে শিক্ষার্থী বলেন, রাস্তায় আমরা অনেক ধরনের হেনস্তার শিকার হই। কিন্ত এই বিষয়ে সাপোর্ট করার জন্য আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো কমিটি নেই। আরেক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ বিষয়ে কমিটি করা দরকার। যেন শুধু আমরা মেয়েরা নির্যাতনের কথাগুলো সরাসরি বলতে পারি।

অথচ ১৩ বছর আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন রোধে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। তবে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই এখনো হয়নি কোনো কমিটি। এক কলেজ শিক্ষক বলেন, আমাদের কলেজে নির্যাতনবিরোধী কোনো কমিটি নেই। আরেক শিক্ষক বলেন, যৌন নির্যাতন রোধে আমাদের কলেজেও কোনো কমিটি নেই।

নারীদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট কর্মী কল্পনা রায় বলছেন, উদাসীনতা, অবহেলা, প্রভাবশালীদের তাবেদারি করার মনোভাবের কারণেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে গড়ে উঠছেনা যৌন নির্যাতন বিরোধী সেল।

রাজশাহী মহিলা পরিষদের পরিচালক কল্পনা রায় বলেন, প্রশাসনিক ভাবে যদি জোর দেয়া হয়। এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য করতে হবে যৌন নির্যাতন বিরোধ সেল তৈরি করতে। তাহলে তারা করতে বাধ্য।

বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে দাবি করে যেসব প্রতিষ্ঠানে কমিটি নেই, দ্রুত গঠনের আশ্বাস দেয় জেলা প্রশাসন। রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, শিক্ষা কমিটি ও উপজেলা কমিটিগুলো কীভাবে আরও কার্যকরী করা যায়, সে বিষয়গুলো আমরা চিন্তা ভাবনা করছি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে