নির্মাণেও গতি নেই দেশের প্রথম শহীদ মিনারের

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০; সময়: ১:৩৫ অপরাহ্ণ |
নির্মাণেও গতি নেই দেশের প্রথম শহীদ মিনারের

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী কলেজে নির্মিত দেশের প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো গত বছরের জুন মাসে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কাজই শুরু হয়নি ভাষা শহীদদের স্মরণে রাজশাহীতে নির্মিত দেশের প্রথম শহীদ মিনার পূণ:নির্মানের কাজ। এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর শহীদ মিনারটির আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়।

নকশা অনুমোদন, জমি পরিবর্তন ও বাজেট সংকটের কারণে নির্মাণ কাজে দেরি হচ্ছে। তবে আগামী ৩ মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে রাসিক। যদিও ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পার হয়ে গেলেও এখনও স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত শহীদ মিনারটি।

রাসিকের দেয়া তথ্যমতে, সুদৃশ্য এই শহীদ মিনারটির উচ্চতা হবে ভূমি থেকে ৫৫ ফিট। এতে থাকবে তিনটি পিলার। বড় পিলারটির উচ্চতা হবে ৫২ ফিট। এটি হবে সিলভার কালারের। মধ্যম ও ছোট পিলারের উচ্চতা হবে যথাক্রমে ৪০ ফিট ও ৩০ ফিট। মধ্যম ও ছোট পিলার ২টি হবে পোড়ামাটি রঙের। শহীদ মিনারের বেদীতে ইতিহাস ও ঐতিহ্য লিপিবদ্ধ থাকবে।

সূত্রমতে, ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় শুরু করে রাত ১২টায় শেষ হয় দেশের প্রথম শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে ওই শহীদ স্মৃতি স্তম্ভের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। অবশ্য কয়েক ঘণ্টা পরই তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের পুলিশ সেটি ভেঙ্গে দেয়।

তারপরে ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম এই শহীদ মিনারটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানায় ‘চেতনায় একুশ’ নামের একটি সংগঠন। তারা ভাষা সৈনিকদের নিয়ে সে সময় রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই জায়গাটি সংরক্ষণের পাশাপাশি এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান। সে বছরই প্রথম ২১ ফেব্রুয়ারিতে এখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ‘চেতনায় একুশ’সহ রাজশাহীর বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। পরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও রাজশাহী কলেজ প্রশাসন যৌথভাবে এখানে একটি স্মৃৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে দেন।

পরবর্তিতে রাজশাহী কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ২০০৯ সালে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির সেই স্থানটিতে একটি ফলক নির্মাণ করা হয়। ফলকটি উন্মোচন করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন তৎকালীন ও বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। পরে ২০১৫ সালে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের উদ্যোগে এই স্থানটিতে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয় (বর্তমানে সেটির নির্মাণ কাজ চলমান)।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান বলেন, মেয়র মহোদয়ের প্রচেষ্টায় সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে শহীদ মিনারটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ টাকা দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। শহীদ মিনারটির নির্মাণ কাজ অনেক আগে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি। এমনকি কাজের যে ধীরগতি তাতে আগামী ৫ মাসের মধ্যেও শেষ হবে কি না সন্দেহ আছে।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ চলছে। শহীদ মিনারের জন্য প্রথমে যে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছিল সে জমিটা ভাল ছিল না। পরে জায়গা পরিবর্তন করা হয়েছে। আর এ কাজের জন্য ৫০ লাখ টাকা বাজেট দেয়া হয়েছে। সেই টাকাতে নির্মাণ কাজ শেষ হবে না। এসব কারণেই কাজ শেষ হয়নি। তবে আমাদের টার্গেট আছে আগামী ৩ মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে