লিটনের বিকল্প দেখছেন না তৃণমূল, সভাপতি হতে চান ফারুক-বজলুরও

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০; সময়: ৩:০৩ অপরাহ্ণ |
লিটনের বিকল্প দেখছেন না তৃণমূল, সভাপতি হতে চান ফারুক-বজলুরও

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন পহেলা মার্চ। সম্মেলন উপলক্ষে এরই মধ্যে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। পদ প্রত্যাশীদের অধিকাংশ নেতারা ঢাকা অবস্থান করছেন। পদ পেতে কেন্দ্রে চলছে নেতাদের দৌড়ঝাঁপ। নিজ নিজ শক্তি ও বলয়ে চলছে লবিং-গ্রুপিং।

সভাপতি পদে আলোচনায় এবারো শীর্ষে রয়েছেন বর্তমান সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি ছাড়াও এবার সভাপতি পদ প্রত্যাশীদের তালিকায় নাম তুলেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ও রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। এছাড়াও সভাপতি পদ পেতে চান নগর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান বজলুর রহমান। তবে এদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি পদে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বিকল্প দেখছেন না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

নগর আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রমতে, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বসে সম্মেলনের দিনখন চুড়ান্ত করে শনিবার ঢাকায় গেছেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। আর ঢাকায় অবস্থান করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুর রহমান সভাপতি পদ পেতে হাই কমান্ডে দৌড়ঝাঁপ করছেন। চালাচ্ছেনস তদ্বির ও লবিং। এছাড়া সভাপতি প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে কেন্দ্র তদ্বির চালাচ্ছেন রাজশাহী-১ আসনের সংসদ ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন এবং রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী আপন ফুফাতো মামাতো ভাই।

গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। কারণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজনের সমন্বয়ক ছিলেন লিটন। ওই সময় রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সফল করতে খায়রুজ্জামান লিটনের গঠন করে দেওয়া কমিটির বিরোধিতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। তবে দুইজন তাকে সমর্থন দিলেও উপস্থিত অন্য সদস্যরা লিটনের পক্ষে সমর্থন জানান। যে কারণে বিরোধিতা করেও শেষ পর্যন্ত কোনো লাভ হয়নি ফারুক চৌধুরীর।

সম্মেলন উপলক্ষে গত ১৮ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের ওই জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্বে থাকা নগরের সভাপতি খায়রুজ্জামান লিটন ওই সভা ডেকেছিলেন। জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে তিনিই সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে দেন। এতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। একারণে সম্মেলনে সভাপতি হন এবং পরে জেলার সভাপতির পদ পেয়ে যান তিনি। জেলায় পদ না পাওয়া সব এসব কারণ নিয়ে এবার মহানগরের সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে মহানগরের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে চাইছেন ওমর ফারুক চৌধুরী।

এদিকে, সভাপতি পদ পেয়ে আগ্রহী আরডিএর সাবেক চেয়ারম্যান বজলুর রহমান শুধু কর্মী বিচ্ছিন্নই নন, তিনি একজন গণবিচ্ছিন্ন নেতাও। বর্তমানে নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই। তাই কেন্দ্র থেকে তার মতো নেতৃত্বকে চাপিয়ে দেওয়া হলে বিষয়টিকে অঘটন হিসেবেই দেখবেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদটি নিয়েও বর্তমানে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। দলের ভেতরে ও বাইরে গুরুত্বপূর্ণ এই সাংগঠনিক পদটি নিয়ে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন প্রায় ডজন খানেক নেতা। এরা হলেন, বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হুদা রানা ও মোস্তাক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু।

এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক হতে চান রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান বাবু, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক, প্যানেল মেয়র-১ সরিফুল ইসলাম বাবু।

তবে নতুন করে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা নিয়েছেন বর্তমান কমিটির সহসভাপতি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের রুবন।

সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আগামী পয়লা মার্চ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর শুভ উদ্বোধনও একই মাসে হবে। দুইটি বিষয়কে মাথায় রেখেই এই মহানগরীকে সাজিয়ে তোলা হবে। দেখার মতো একটি সম্মেলন হবে। শান্তির শহর রাজশাহীতে শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সম্মেলন এবং পরবর্তীতে মুজিববর্ষ উদ্যাপন হবে বলে আশা করছি।’

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয় ২০১৪ সালের ২৫ অক্টোবর। ওই কাউন্সিলে খায়রুজ্জামান লিটন সভাপতি ও ডাবলু সরকার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগের পাঁচটি সাংগঠনিক থানা ও ৩৭টি ওয়ার্ড কমিটি রয়েছে। ওয়ার্ড ও থানা কমিটিগুলো নতুনভাবে না হওয়ায় ২০১৪ সালের করা ৩৯৫ জন কাউন্সিলর দিয়েই এবারে মহানগর কমিটির সম্মেলন হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে