ভারত থেকে এখনই ফেরানো যাচ্ছে না আড়াই হাজার বাংলাদেশিকে

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২০; সময়: ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ |
ভারত থেকে এখনই ফেরানো যাচ্ছে না আড়াই হাজার বাংলাদেশিকে

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : চিকিৎসাসহ নানা কারণে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া প্রায় আড়াই হাজার বাংলাদেশিকে এখনই দেশে ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না। মূলত, করোনাভাইরাসের কারণে ভারতজুড়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন থাকায় এটি সম্ভব হচ্ছে না।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। অবশ্য এর আগে সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা ভারতে গিয়ে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফেরানোর প্রস্তুতির কথা বারবার বলে আসছিলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর ব্যাপক প্রসারের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে সজাগ দৃষ্টি রাখছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রবাসী প্রতিবছর বিভিন্ন কারণে (চিকিৎসা, পর্যটন, শিক্ষা প্রভৃতি) ভারত গমন করে। গত ২৫ মার্চ থেকে ২১ দিন অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ভারত থেকে সব ধরনের যানবাহন (বাস, রেল, বিমান) চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ মুহূর্তে বিভিন্ন কারণে ভারতে গমন করা বা আটকে পড়া বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার।

এর মধ্যে এক হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। কোভিড-১৯ এর ব্যাপ্তি রোধকল্পে ভারত সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো ধরনের বিদেশি (প্রবাসী ভারতীয়সহ) ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ভারতে প্রবেশ করতে পারবে না। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ভারত থেকেও কোনো বিদেশি নাগরিকের বহির্গমন নিরুৎসাহিত করছে। তা ছাড়া ভারতের আন্তরাষ্ট্রীয় যোগাযোগব্যবস্থাও এ মুহূর্তে বন্ধ রয়েছে।

এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনসহ ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনসমূহ বাংলাদেশিদের প্রতি দৃষ্টি রাখছে। মিশনের কর্মকর্তারা আটকে পড়া বাংলাদেশির সঙ্গে টেলিফোন, হটলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন। আটকে পড়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা আর্থিক বা অন্য কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে হাইকমিশন ও অন্যান্য মিশন তা সমাধানে সচেষ্ট আছে।

এদিকে, বেনাপোল দিয়ে ৭৫ বাংলাদেশি ফিরেছেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে শুক্রবার ৭৫ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৫ জন বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে এসেছেন। দেশে ফেরা লোকজনের প্রায় সবাই অসুস্থ হয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ফেরত আসা নাগরিকদের হাতে ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ সিল দেওয়া হচ্ছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে ভারত সরকার আগেই স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর শুরু ভারতজুড়ে লকডাউন। পরে বাংলাদেশ সরকারও বিদেশি যাত্রী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। দুই দেশেই যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তারপরও বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে প্রতিদিনই ৩০ থেকে ৫০ জন বাংলাদেশি নাগরিক আসছেন। যাঁরা দেশে ফিরছেন, তাঁদের সবারই হাতে ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ সিল দিয়ে বাড়িতে অবস্থান করার জন্য বলা হচ্ছে। এর মধ্যে ভারতে আটকে পড়া ৪৫ জন নাগরিক ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনে যোগাযোগ করে বেনাপোল দিয়ে গতকাল দেশে ফেরেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবীব বলেন, প্রতিদিনই সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে সন্ধ্যায় সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত বেনাপোল ইমিগ্রেশন খোলা রয়েছে। প্রতিদিনই ৩০ থেকে ৫০ জন বাংলাদেশি যাত্রী ভারত থেকে ফিরছেন। শুক্রবারই ৭৫ জন ফিরেছেন। এর মধ্যে ৪৫ জন বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে দেশে ফেরেন। ভারতে লকডাউন থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দেশে ফিরতে রাস্তায় যাতে কোনো সমস্যা না হয়, এ জন্য তাঁরা বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করেন। হাইকমিশন থেকে আমাকে মুঠোফোনে তাঁদের আসার খবর নিশ্চিত করা হয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে