বাঘা-চারঘাটে পদ্মার তীর রক্ষায় বরাদ্দ ৭২২ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০; সময়: ৪:১৭ অপরাহ্ণ |
বাঘা-চারঘাটে পদ্মার তীর রক্ষায় বরাদ্দ ৭২২ কোটি টাকা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ৭২২ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থাপনাসমূহ নদী ভাঙন হতে রক্ষা প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। একই সঙ্গে আরও সাতটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একনেকের সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে চারঘাট বাঘা উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এক বিবৃতিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ৭২২.২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চারঘাট-বাঘায় ইউসুফপুর থেকে পাকুড়িয়া পর্যন্ত পদ্মা নদীর বাধের কাজের অনুমোদন দিয়েছেন নেত্রী আজকে একনেক সভায়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ এবং নদী ড্রেজিং এর কাজও রয়েছে এর মধ্যে। সেই সঙ্গে তিনি নদী তীরের মানুষদের ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রী ও তার প্রতি আস্থা রাখার জন্য।

একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের জানান, মোট ৮টি প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৩৯ কোটি টাকা। ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থাপনাসমূহ নদী ভাঙন হতে রক্ষা প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ২ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে হবে ‘রাজশাহী মহানগরীরর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।

তিনি জানান, পদ্মাসেতু হয়ে শরীয়তপুর জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার উন্নত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে ১ হাজার ৬৮২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা ব্রিজ অ্যাপ্রোচ) সড়ক উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে জেলার উন্নত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হবে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে। আর ১১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হাওর অঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন ও ১২৮ বিলুপ্ত ছিটমহল ও নদী বিধৌত চরাঞ্চল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

এদিকে ৬ হাজার ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মোংলা বন্দরকে রপ্তানি উপযোগী একটি আন্তর্জাতিক বন্দরে রূপান্তর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এটি বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দরে সব ধরনের সুবিধাসহ জেটি ও কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের পাশাপাশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান বলেন, পদ্মাসেতু প্রকল্পের ইতিবাচক প্রভাব দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। এই সেতুর সুফল পাবে দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটেও। এখন এই নৌরুট মানেই যেন যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের ভোগান্তি।

‘পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটকে আধুনিক নৌবন্দর হিসেবে রূপ দিতে মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। পদ্মাসেতু নির্মিত হলে যখন এই নৌরুটে যাত্রী ও যাত্রীবাহী যানবাহনের চাপ কমে যাবে, তখন এটিকে গড়ে তোলা হবে বিজনেস হাব বা বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে। তখন ভারী মালামাল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হবে এই ঘাট। আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো হবে এই নদীবন্দর দিয়ে।’

তিনি বলেন, এখান থেকে নদীপথে সারাদেশে পণ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করবে সরকার। পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারি মালামাল প্রকল্প এলাকায় পৌঁছে দিতেও এই নদীবন্দর ব্যবহার করা হবে। আর কার্গো বা পণ্য হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য সব ধরনের অবকাঠামোগত সুবিধা গড়ে তোলা হবে।

এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেওয়া হয়েছে ‘পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় আধুনিক সুবিধাদিসহ নদী বন্দর আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্প। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। সরকারি অর্থায়নে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ)।

৪০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ সড়কসহ কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়ককে চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান এমএ মান্নান। তিনি বলেন, ২৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী কামাল উদ্দীন সড়ক হতে কবিরহাটের ফলাহারী পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক।

  • 18
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে