চীনে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৪৫

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০; সময়: ১০:০১ পূর্বাহ্ণ |
চীনে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৪৫

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : চীনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে শুক্রবার আরও ১০৯ জন প্রাণ হারিয়েছে। এর ফলে এই ভাইরাসে দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২৩৪৫য়ে গিয়ে দাঁড়ালো।

বৃহস্পতিবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের সংবাদ মাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।

শনিবার সকালে চীনা স্বাস্থ্য কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, শুক্রবার দেশটিতে করোনাভাইরাসে আরও ১০৯ জন প্রাণ হারিয়েছে। এদের মধ্যে ৯০ জনই হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানের বাসিন্দা।

স্বাস্থ্য কমিশন আরও জানায়, দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে আরও ৩৯৭ জন। ফলে দেশটিতে ভয়াবহ এই ভাইরাসে মোট ৭৬,২৮৮ জন আক্রান্ত হলো। এর মাত্র একদিন আগে অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার সেখানে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল ৮৮৯ জন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে চীনের দুটি জেলখানায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় চাকরি গেছে কারা কর্মকর্তাদের।

এদিকে চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার আরও ২ হাজার ৩৯৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। ফলে দেশটিতে রোগমুক্ত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ২০ হাজার ৬৫৯ জন।

এদিকে শুক্রবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দেশটির স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, আক্রান্তদের সর্বাত্মক সেবা দেয়া হচ্ছে। তাদের ভাইরাসের পরিমাণ স্থিতিশীল অবস্থায় থাকায় ভয়ের কারণ নেই। এর আগে সিঙ্গাপুরে পাঁচ বাংলাদেশির শরীরে এই ভাইরাস ধরা পড়ে। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা ‘সঙ্কটাপন্ন’ বলে জানিয়েছে সেখানকার বাংলাদেশ হাইকমিশন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে ৭৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা গেছেন। দেশটিতে করোনায় এটিই প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। শনিবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর পাদুয়ায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর ওই অঞ্চলের মানুষকে তাদের নিজ বাসভবনে থাকতে বলা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান-কার্যক্রম।ইতালিতে প্রায় ১৫ জন প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

এর ফলে চীনের বাইরে করোনায় মৃতের সংখ্যো বেড়ে ১৫তে গিয়ে দাঁড়ালো। এদের মধ্যে ইরানে চারজন, জাপানে তিনজন, হংকং-দক্ষিণ কোরিয়ায় দু’জন করে এবং তাইওয়ান, ফিলিপাইন, ফ্রান্স ও ইতালিতে একজন করে মারা গেছেন। আর বিশ্বের ২৫টি দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মোট ১০৭৬ জন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন কোরোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়ে যাওয়ায় দুটি শহরকে ‘স্পেশাল কেয়ার জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার।

প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন-ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ।

পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম দশা চীনা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। শুধু চীন নয়, বিশ্ব জুড়ে বড় বড় গবেষকরা নেমে পড়েছেন নোভেল করোনা রুখে দেওয়ার ওষুধ তৈরিতে। কিন্তু এখনও এই ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।

ইতিমধ্যে করোনাভাইরাসকে বিশ্ববাসীর জন্য ‘মারাত্মক হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার মহাপরিচালক ইথিওপিয়ার টেডরস আধানম গেব্রিয়াসেস বলেছেন, এ ভাইরাসটি ‘যেকোনো সন্ত্রাসবাদী পদক্ষেপের চেয়েও শক্তিশালী’হতে পারে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে