প্রথমদিনেই দুই শতাধিক কল পেয়েছে রামেকের চিকিৎসকরা

প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২০; সময়: ১০:২৬ অপরাহ্ণ |
প্রথমদিনেই দুই শতাধিক কল পেয়েছে রামেকের চিকিৎসকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুই শতাধিক ফোনকল পেয়েছে করোনা ভাইরাস নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদানের জন্য গঠিত রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কমিটি। তবে এসকল কলের মধ্যে করোনা বিষয়ে কথা বলেছেন হাতে গোনা কয়েকজন। অন্যান্য রোগের চিকিৎসা পরামর্শ নিতেও অনেকেই ফোন করছেন। এছাড়াও ফোনকলে মহিলা ডাক্তারকে উত্যক্ত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

সোমবার করোনাভাইরাস নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদানের জন্য মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আজিজুল হক আজাদকে আহ্বায়ক করে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে রামেক কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে না গিয়ে কমিটির চিকিৎসকদের সরাসরি কল করে করোনা বিষয়ে পরামর্শ নেয়ার জন্য তাদের ফোন নম্বর উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এছাড়া তথ্য আদান-প্রদান ও প্রাপ্ত তথ্যাদি রেজিস্টারভুক্ত করার জন্য চালু করা হয় হটলাইন নম্বর।

একদিন পরে কমিটির সদস্যরা জানান, তাদের কাছে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দুই শতাধিক কল এসেছে। চিকিৎসকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কল পেয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক ডা. আজিজুল হক আজাদ। তিনি জানান, সোমবার ও মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনি মোট ১১০টি কল পেয়েছেন। এরমধ্যে সোমবার ৬৫টি ও মঙ্গলবার ৪৫টির মত ফোন পেয়েছেন তিনি। তবে এগুলোর একটিও করোনা আক্রান্ত নয় বলে জানান এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

ডা. আজিজুল হক আজাদ বলেন, ১১০টি কলের একটিও করোনা আক্রান্ত নয়। এদের বেশিরভাগই অ্যাজমা, সাধারণ সর্দি, জ্বর, বুকে ব্যাথা সমস্যা নিয়ে কল করেছেন। এছাড়াও অন্যরা কেউই ফোনকলের নির্দিষ্ট সংখ্যার হিসেবে রাখেননি।

অন্য ডাক্তারদের মধ্যে জহুরুল হক আনুমানিক ২০টি, সৈয়দ মাহবুব আলম ১০-১২টি, হারুন অর রশীদ ৪-৫টি, আখতারুল ইসলাম ৬-৭টি, নাজনীন পারভীন ২০টি, সেলিম খান ৭-৮টি, আমজাদ হোসেন প্রাং সোমবার ৮-১০টি ও মঙ্গলবার ১৫-১৬টি এবং সিদ্দিকুর রহমান ৩-৪টি ফোনকল পেয়েছেন। এছাড়াও ডাক্তারদের মধ্যে রকিবুল ইসলাম, মোহাইমেনুল হক, প্রবীর মোহন বসাককে ফোন করলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এছাড়াও ওয়েটিং পাওয়া গেছে রেজাউল ইসলামের ফোন।

অন্যদিকে, মঙ্গলবারের জন্য প্রদত্ত ২টি হটলাইন নম্বরের একটিতে ৮-১০টি ফোনকল এসেছে। আরেকটিতে রাত ৮টা পর্যন্ত কোন কল আসেনি বলে জানা গেছে। এছাড়াও আনুষ্ঠানিকভাবে মোট ফোনকল সংখ্যার হিসেবে রাখা হচ্ছেনা বলে জানান চিকিৎসা কমিটি।

ফোনকল বিষয়ে ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, যেগুলো ফোন পেয়েছি তার একটিও করোনায় আক্রান্ত না। মানুষ ভয় পেয়ে, আতঙ্কিত হয়ে টেলিফোন করছে। এছাড়াও অনেকেই করোনা বিষয়ে জানাও জন্য ফোন করেছেন বলে জানান ডাক্তাররা।

কমিটির অন্তর্ভূক্ত ডাক্তাররা অনেক নিজস্ব চেম্বার ও বেসরকারিভাবেও প্র্যাকটিস করেন। সেখানে তারা অনেক বেশি ফি নেন। ফোন নম্বর পাওয়ার পরে সুযোগটা কাজে লাগিয়ে অনেকেই অন্য রোগের বিষয়েও পরামর্শ নিচ্ছেন কিনা প্রশ্ন করলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা কমিটির আহ্বায়ক ডা. আজিজুল হক আজাদ বলেন, হ্যাঁ এমনটাও হতে পারে। যেহেতু আমি একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অনেকেই অন্যান্য বিষয়েও পরামর্শ নিতে ফোন করে থাকতে পারেন। সাধারণ জ্বর, সর্দিতেও অনেকেই ফোন করেছেন বলে জানান এই চিকিৎসক।

এদিকে, করোনা ভাইরাস বিষয়ে পরামর্শের জন্য নিজের ফোন নম্বর উন্মুক্ত করে বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসক কমিটির সদস্য ও শিশু বিশেষজ্ঞ নাজনীন পারভীন। মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত তিনি ২০টির মত ফোনকল পেয়েছেন। এগুলোর মধ্যে ৫টি কল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছে, বেশিরভাগই অপ্রাসঙ্গিক ও ইভটিজিং করার অভিপ্রায়ে ছিল বলে অভিযোগ করেন এই চিকিৎসক।

ডা. নাজনীন পারভীন বলেন, আমি আমার দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে এক মূহুর্তের জন্যও ফোন বন্ধ করিনি। মহিলা হওয়ার কারনে কিনা জানিনা, হাতে গোনা ৫ জন ফোন করে করোনা বিষয়ে বা প্রয়োজনীয় প্রাসঙ্গিক কথা বলেছেন। কিন্তু বেশিরভাগই ইভটিজিং বা উত্যক্ত করেছে। তারা ফোনে অনেক বাজে ও উল্টাপাল্টা মন্তব্য করেছে। তারপরেও ফোন বন্ধ করিনি। এছাড়াও তিনি বিষয়টি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) অধ্যক্ষকে অবহিত করেছেন বলে জানান।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে