রাবিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছয় ছাত্রীর

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০; সময়: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ |
রাবিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছয় ছাত্রীর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্যক্তের অভিযোগ এনেছে বিভাগের ৬ ছাত্রী। বুধবার দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের ‘যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ সেলে’ ভুক্তোভোগী ছাত্রীরা এই অভিযোগ করেন।

এর আগেও মোমেনীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা এবং বিভাগের সভাপতির কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন বলে বিভাগ সূত্রে জানা যায়। তবে এই ধরণের অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক আমিরুল।

আর অভিযোগপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু। তিনি বলেন, চারুকলা অনুষদের ছাত্রীদের কাছ থেকে একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীরা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, আমরা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরী দ্বারা বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি ও মানুষিকভাবে উত্ত্যক্তের শিকার হই। যার কারণে আমরা মানসিকভাবে অনেক বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছি। পড়াশুনা এবং অন্য কোনো কাজেই মনযোগ দিতে পারছি না।’

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা আরও উল্লেখ করেন, কারণে অকারণে স্যার আমাদেরকে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ ভাষায় মন্তব্য করে। অফিসে ডেকে বসিয়ে রাখেন। ফ্রি মাইন্ডের কথা বলে একাধিক ছাত্রীর সামনে মেয়েদের শরীর সম্বন্ধীয় ব্যাপারে ইঙ্গিত করে নানা অশালীন ও ইঙ্গিতপূর্ণ কথাবার্তা বলেন। অনেকসময় সবার সামনে গায়ে হাত দেন। অন্য নারী শিক্ষকদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। এছাড়াও অভিযুক্ত শিক্ষক কোর্সের নম্বরের কথা বারবার উল্লেখ করে শিক্ষকের ক্ষমতা দেখাতেন বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা।

ভুক্তভোগী এক ছাত্রী বলেন, আমি আর মানসিকভাবে সহ্য করতে না পেরে অভিযোগ করেছি। আমি চাই না ওই শিক্ষক আমাদের সাথে এমন আচরণ করুক। আমি নায্য বিচার চাই।

এই বিষয়ে ভুক্তোভোগী কয়েকজন ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা স্যারের কাছে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আসছি। আমরা স্যারকে দেখলে রীতিমত ভয়ে থাকি। তিনি বিভিন্ন জায়গায় সবার সামনে কুরুচিপূর্ণ কথা বলে হেসে ওঠেন। আবার মাঝে মাঝে আমাদের পোশাক নিয়ে মন্তব্য করেন।

জানতে চাইলে এই বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শঙ্কর তালুকদার বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু না জেনে কোন মন্তব্য করতে পারবো না।

এর আগে গত বছর জুন মাসে ২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণুকুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ দিন আন্দোলন করে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে ইনস্টিটিউটের সার্বিক দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যহতি দেয়া হয়। অভিযোগের ৮ মাস পেরোলেও এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে