রাবিতে শিক্ষক পদে আত্মীয়-স্বজনদের নিয়োগ দিতে তোড়জোড়!

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০; সময়: ৫:১২ অপরাহ্ণ |

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, রাবি : রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে দীর্ঘ ধরে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে সোমবার শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ২টি পদে নিয়োগ হতে যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসন ও বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কম যোগ্যতাসম্পন্ন নিকটাত্মীয়দের নিয়োগ দিতে তোড়জোর চলছে। এছাড়া শিক্ষক প্রয়োজন না থাকলেও ইনস্টিটিউটের সিনিয়র শিক্ষকদের মতামত ছাড়াই নিকটাত্মায়দের নিয়োগ দিতে শিক্ষক পদ খুলে বিজ্ঞপ্তি দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

বিশ^বিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সোমবার সমাজবিজ্ঞান ও পরিসংখ্যানের শিক্ষক (২টি) পদে নিয়োগ দেয়া হবে। এতে সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক পদের বিপরীতে ১৭ জন এবং পরিসংখ্যানে ১৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। এদের মধ্যে সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক পদে আবেদনকারী দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আবু বক্কর সিদ্দিকের কন্যা শেখ সেমন্তির মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ফলাফল জিপিএ ৫ এর নিচে এবং স্নাতকোত্তরে দ্বিতীয় বিভাগ রয়েছে বলে জানা যায়।

এছাড়াও প্রয়োজন না থাকলেও পরিসংখ্যান পদ সৃষ্টি করে তাতে আবেদন করেছেন দুই ছাত্রীকে যৌনহয়রানীর দায়ে অভিযুক্ত আইইআরের সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণুকুমার অধিকারীর স্ত্রী কেয়া দাস। এই প্রার্থী একটি বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। এছাড়া এই পদে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে আবেদন করেছেন বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারির এক নিকটাত্মীয়।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আইইআরের শিক্ষাক্রমে পরিসংখ্যানের বিষয় কম থাকায় ইনস্টিটিউটের রিসার্চ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকরাই এতদিন বিষয়গুলো পড়িয়ে এসেছেন। আইইআরের শিক্ষকের চাহিদা পত্রে না থাকলেও বিষ্ণুকুমার অধিকারীর স্ত্রীকে নিয়োগ দিতেই পরে এই পদ খোলা হয়েছে অভিযোগ রয়েছে।

এই বিষয়ে আইইআরের অধ্যাপক আকতার বানু আলপনা বলেন, পরিসংখ্যানের শিক্ষক প্রয়োজন না থাকায় এই পদে নিয়োগের ব্যাপারে আমি ভিসির সামনে তীব্র প্রতিবাদ করেছিলাম। ভিসি আমাদের যুক্তি কর্ণপাত না করে পরিসংখ্যানের জন্য শিক্ষক নিয়োগ দিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বলেন। এছাড়াও শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের একাডেমিক মিটিংয়ে আলোচনা বা অন্য শিক্ষকদের মতামত নেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ এই অধ্যাপকের।

ভূতত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতানুল ইসলাম বলেন, বর্তমান ভিসি যাদের সমর্থন নিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার মুহুর্তে তিনি তাদের আত্মীয়দের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দিতে তোড়জোড় শুরু করেছেন। এরই মধ্যে আইইআরে পরিসংখ্যানের জন্য শিক্ষক প্রয়োজন না থাকলেও শুধুমাত্র ভিসি ও তার সমর্থকদের আত্মীয়দের সুযোগ করে দিতেই শিক্ষক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই বিষয়ে বিষয়ে শিক্ষক দরকার না হওয়ায় আইইআরের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও এটার বিপক্ষে।

নিকটাত্মায়দের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক মো. আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আত্নীয়রা কী আবেদন করার অধিকার রাখে না? এখানে যে কেউ আবেদন করতে পারে। যোগ্যতা অনুসারেই বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন নিয়োগ দিবে। এছাড়াও তিনি বলেন, সবার মতামতের ভিত্তিতে এখানে এই পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে