পুঠিয়ায় খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২২; সময়: ৬:৫৭ অপরাহ্ণ |
পুঠিয়ায় খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া : প্রকৃতিতে শীতের আগমন বার্তা জানান দিচ্ছে। বাঙালির শীতের দিনের অন্যতম আকর্ষণ খেজুর গুড়ের তৈরি পিঠা-পায়েস। তাই পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শীত মৌসুমের আগমনে গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্র্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তারা প্রথমে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করেন। এরপর শুরু হয় রস সংগ্রহ। চিরাচরিত সনাতন পদ্ধতিতে মাটির ভাঁড়ে রাতভর রস সংগ্র্রহ করা হয়। ভোরের সূর্য ওঠার আগে গাছিরা রস ভর্তি মাটির ভাঁড় গাছ থেকে নামিয়ে পরে মাটির হাড়িতে কিংবা টিনের বড় হাড়িতে জ্বালিয়ে গুড়-পাটালি তৈরি করে।

রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইতিমধ্যে গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন। অল্প দিনের মধ্যে বাজারে নতুন খেজুর গুড়-পাটালি পাওয়া যাবে। গ্রাম-বাংলায় এখন চোখে পড়ছে খেজুর গাছ তোলা-চাচার দৃশ্য।

গাছিরা এখন মহা ব্যস্ত। কিছুদিন পরই গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষ থেকে সুমধুর রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড়-পাটালি তৈরির উৎসব।

গ্রামে গ্রামে খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা, পায়েস, মুড়ি-মুড়কী ও নানা রকমের মুখরোচক খাবার তৈরি করার ধুম পড়বে।

সকালে এবং সন্ধ্যায় কাঁচা রস খেতে খুবই মজাদার। রসে ভিজা চিতই পিঠার স্বাদই আলাদা। পাটালি ও দানা গুড়ের সুমিষ্ট গন্ধেই যেন অর্ধ ভোজন। রসনা তৃপ্তিতে এর জুড়ি নেই। পাটালি গুরের মধ্যে নারিকেল কোরা, তিল ভাজা মিশালে আরও সুস্বাদু লাগে।

রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়-পাটালির ইতিহাস অনেক প্রাচীন। চিনির দাম কম হলেও এখন পর্যন্ত বাঙ্গালির কাছে খেজুর গুড়-পাটালির কদর কমেনি। আবহমান কাল থেকে তাই বাংলায় নবান্নের উৎসব পালনে খেজুর গুড়ের কদর বেশি। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাছিরা গাছ পরিষ্কার বা তোলা-চাচার উপকরণ গাছি বাটাল, রশি তৈরি সহ ভাঁড় (মাটির ঠিলে) ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করাসহ বিভিন্ন কাজে রয়েছে ব্যতিব্যস্ত।

উপজেলার বানেশ্বর এলাকার সোহাগ ও আব্দুল মমিন জানান, গাছ কাটা, রস জ্বালানো ও গুড়, পাটালি তৈরির উপকরণের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার গত বছরের তুলনায় গুড়-পাটালির দাম বেশি হতে পারে।

তবে বাজারে ভেজাল ও চিনি যুক্ত গুরের চাপে যে অবস্থা এতে আবার ভাল বা খাঁটি গুড়ের দাম হবে কি না তা নিয়েও দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুন নাহার ভূইয়া জানান, এবছর উপজেলায় ২শত ৮৫ হেক্টর জমিতে ২ লক্ষ ৬০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে।

উৎপাদন লক্ষমাত্রা ২ হাজার মেট্র্রিক টন ধরা হয়েছে এই খেজুর গুড়ের সারাদেশে চাহিদা রয়েছে তাই আরও একটু বেশি হলে গাছীদের রস সংগ্রহ করতে বলেছি বলে জানান এই কর্মর্কতা।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে